গ্রেফতার শীর্ষ সন্ত্রাসীর সঙ্গে কুমিল্লার বিএনপি নেতার ছবি ভাইরাল
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৭ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রাজ্জাক রুবেল ও ছাত্রদল কর্মী সাব্বির হোসেন হত্যা মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে কুমিল্লা জেলা বিএনপির এক নেতার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ছবিতে দেখা যায়, ডানে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সির মাঝে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এবং বাম পাশে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের বড় ভাই রাকিব মুন্সি।
এর আগেও আওয়ামী লীগের এমপি ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতির সঙ্গে এই বিএনপি নেতার ছবি ভাইরাল হয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
খাইরুল আমীন ও বিএম জহির নামের দুই ব্যক্তি তাদের ফেসবুকে ছবি পোস্ট দিয়ে লেখেন- ২০১৪ সালের এএফএম তারেক মুন্সি দোয়াত-কলম নিয়ে উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচন করেন। সেই সময় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী রুহুল আমীনের কাছে তিনি পরাজিত হন। তখন তারেক মুন্সির নির্দেশে সাদ্দাম হোসেন বিএনপির সাবেক এমপি মঞ্জুরুল আহসান মুন্সি ও বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে মঞ্জু মুন্সিসহ নেতাকর্মীরা জেল খাটেন ওই মামলায়।
উপজেলা বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সি তার আপন ছোট ভাই এএফএম তারেক মুন্সিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করেন। তখন এ আসনের এমপি ছিলেন তারেক মুন্সির আপন ভাতিজা রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। তারেক মুন্সি দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রুহুল আমীনের কাছে পরাজিত হন।
ওই নির্বাচনের গণসংযোগ চলাকালে বিএনপির সাবেক এমপি মঞ্জু মুন্সির গাড়িতে গুলিবর্ষণ করেন সাদ্দাম হোসেন। পরে তারেক মুন্সি ও তার আপন ভাতিজা তৎকালীন এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের নির্দেশে বিএনপির সাবেক এমপিসহ ৫৭ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে মিথ্যা মামলায় দায়ের করেন সাদ্দাম।
ওই মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি মঞ্জুরুল আহসান মুন্সি ও তার ছেলে ব্যারিস্টার রিজভিউল আহসান মুন্সিসহ ৩২ জন নেতাকর্মী জেল খাটেন।
এছাড়াও তারেক মুন্সির বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রাজ্জাক রুবেলের হত্যাকারী সাদ্দাম হোসেন ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।
গত ২৪ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে শহিদ রুবেলের মা হোসনে আরা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের সাবেক দুইবারের এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও তার ক্যাডার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজন হত্যাকারীকে বাঁচাতে বড় অঙ্কের টাকার অফার দেয় তারেক মুন্সির নেতৃত্বে বিএনপির একটি পক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এফএম তারেক মুন্সি বলেন, সাদ্দামের সঙ্গে যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে সেই ছবিটি ২০০৮ বা ২০০৯ সালের। তখন সাদ্দাম কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না।
তিনি আরও বলেন, দেবিদ্বারে আমার প্রতিপক্ষরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে এবং আমার সম্মানহানি করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।