৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার নির্দেশ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম
সিরাজগঞ্জে পুলিশ হেফাজতে রোকন মোল্লা নামে এক ট্রাকচালককে নির্যাতনের ঘটনায় উল্লাপাড়া ও সলঙ্গা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা রুজুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকালে সলঙ্গা থানা আমলি আদালতের বিচারক কেএম শাহরিয়ার বাপ্পী এ আদেশ দেন।
এর আগে ট্রাকচালক রোকন মোল্লা বাদী হয়ে সলঙ্গা আমলি আদালতে মামলা রুজুর আবেদন করেন। পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারকে বাদীর আবেদনটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজুর নির্দেশ দেন।
অভিযুক্তরা হলেন- উল্লাপাড়া মডেল থানার সাবেক ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম, সলঙ্গা থানার সাবেক ওসি এনামুল হক, পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাজউদ্দিন আহমেদ, উপ-পরিদর্শক মুনসুর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক আব্দুল কুদ্দুস ও উল্লাপাড়া থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক আব্দুস ছালাম। এতে আরও ৯ থেকে ১০ জন পুলিশ সদস্যকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
বুধবার সকালে বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম হাদী কিরণ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ট্রাক চালককে নির্যাতনের ঘটনায় সলঙ্গা আমলি আদালত পুলিশ সুপারকে মামলাটি রুজুর নির্দেশ দিয়েছেন।
রোকন মোল্লা পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার নেছড়াপাড়া গ্রামের রহমত মোল্লার ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৩১ মে রোকন মোল্লা গাড়ি চালিয়ে বগুড়া থেকে পাবনা যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা-নগরবাড়ি মহাসড়কের কাওয়াক মোড়ে রাত্রিকালীন দ্বায়িত্বরত পুলিশের পিক-আপের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তার গাড়ির। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানার সাবেক ওসি আসিফ মোহাম্মদ, রোকন মোল্লার দিকে পিস্তল তাক করেন। রোকন ভয়ে ট্রাক ঘুরিয়ে সিরাজগঞ্জ রোডের দিকে দ্রুত ছুটতে থাকলে পুলিশের গাড়িও তার পিছু নেয়। পরে খবর পেয়ে সলঙ্গা থানার ওসি এনামুল হক পিছু নিয়ে রাজশাহী-পাবনা মহাসড়কের হরিণচড়া থেকে আটক করেন রোকন মোল্লাকে। ওই সময় মারধর ও বিবস্ত্র অবস্থায় সড়কের পাশের পুকুরে নামিয়ে নির্যাতন করেন পুলিশ সদস্যরা। এরপর ওসি এনামুল তাকে পুকুর থেকে তুলে গুলি করে মেরে ফেলতে বলেন ওসি আসিফ মুহাম্মদকে। পরে রোকনের ডান পায়ে গুলি করেন আসিফ মুহাম্মদ।
আহত অবস্থায় তাকে সলঙ্গা থানায় নিয়ে ৩মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা অর্থপেডিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রোকনকে। সেখানে ডান পা কেটে ফেলা হয় তার। সুস্থ হয়ে তিনটি মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন তিনি।
প্রধান অভিযুক্ত উল্লাপাড়া মডেল থানার সাবেক ওসি আসিফ মুহাম্মদ বলেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ওই ট্রাক চালক আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার। তার বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার বিভিন্ন থানায় ২৮টি মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের এসপি ফারুক হোসেন বলেন, ট্রাক চালকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি রজুর নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ মতে মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলছে।