সাঘাটায় বিএনপির কাউন্সিল ভোটার তালিকায় আ. লীগ নেতাকর্মীদের নাম: নির্বাচন স্থগিত
সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:২৬ এএম
ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় বিএনপির কাউন্সিল ভোটার তালিকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ থাকায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। আর এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও দলীয় প্রার্থিতা এবং ভোটার তালিকা সংশোধনে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।
নির্বাচন কমিশনাররাই এখানে প্রার্থী এবং নিজেদের মনোনয়নপত্র নিজেরাই যাচাই-বাছাই করেছেন। একই সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ফরমও যাচাই করে একতরফাভাবে বাতিল করা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং সহকারী কমিশনাররা নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথ সুগম করেছেন।
সাঘাটা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আনোয়ার হোসেন রানা জানান, তার মনোনয়নপত্র যাচাই করেছেন তারই প্রতিদ্বন্দ্বী আতিকুর রহমান, যিনি সহকারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। রানার মনোনয়ন বাতিল করে আতিকুর নিজেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।
বিএনপির নিবেদিত কর্মীদের অভিযোগ, বিভিন্ন ইউনিয়নে ভোটার তালিকায় আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কামালেরপাড়া ইউনিয়নে যুবলীগ নেতা এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদধারী ব্যক্তিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ১৩ বছর বয়সী আরিফুর রহমানসহ একাধিক অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং একই ব্যক্তির নাম দুইবার তালিকাভুক্ত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
কামালেরপাড়া ইউনিয়নের সদস্য সচিব হযরত আলীর বিরুদ্ধে তার পরিবারের ১৪ জন সদস্যকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে তার স্ত্রী, ভাই, ভাগ্নে এবং ভাতিজারা রয়েছেন।
সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপি’র নিবেদিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে নিজেরা পছন্দের ব্যক্তিদের নির্বাচিত করার জন্য ভোটার তালিকায় ব্যাপক হেরফের করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল কর্মীরা। জুমারবাড়ী ইউনিয়নের সভাপতি প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের বিএনপি’র ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই অনুপ্রবেশ দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।’
তৃণমূলের অভিযোগ এবং অনিয়মের তথ্য যাচাই করতে জেলা বিএনপি’র তদারকি কমিটির প্রধান সহ-সভাপতি আলমগীর মোন্নাফসহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। অনিয়ম চিহ্নিত হওয়ায় ইউনিয়ন বিএনপি কাউন্সিল আপাতত ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
বিএনপি’র নিবেদিত কর্মীদের দাবি, দলের অভ্যন্তরীণ শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করতে হবে। এ ছাড়া, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।