ঝিনাইদহ আ.লীগের সম্পাদক মিন্টু আরও এক মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে আরও একটি হত্যা মামলা শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর জামায়াত কর্মী মো. তারেক হাসান ওরফে সজীব হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার সকালে ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় তাকে। এর পর ওই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয় তাকে।
সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে মিন্টুকে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফারুক আযম।
এর আগে বিশেষ ব্যবস্থায় ঝিনাইদহ জেলা কারাগার থেকে মিন্টুকে আদালতে আনা হয়। এ সময় সজীব হত্যা মামলার তদন্তকারী সিআইডির পরিদর্শক কামাল হোসেন জামায়াত কর্মী মো. তারেক হাসান ওরফে সজীব হত্যার ঘটনায় মিন্টুকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান। আদালত তদন্তকারীর আবেদন মঞ্জুর করেন।
মিন্টুর আইনজীবী শামসুজ্জামান তুহিন জানান, আদালত সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করে মিন্টুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তিনি দাবি করেন, জামায়াত কর্মী সজীব হত্যার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জড়িত ছিলেন না। পুলিশের ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন সজীব।
অ্যাডভোকেট তুহিন জানান, ১০ জন আসামির মধ্যে ৫ জন পুলিশ সদস্য।
আদালত সূত্র জানায় ২০১৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে জামায়ত কর্মী মো. তারেক হাসান ওরফে সজীবকে জেলা শহরের আলহেরা স্কুলের কাছ থেকে সাদা পোশাকে অপহরণ করে পুলিশ। পুলিশ সজীবকে আটকের কথা স্বীকারও করে। কিন্তু একই বছরের ২৫ অক্টোবর সকালে স্থানীয় বাইপাস সড়ক সংলগ্ন ভুটিয়ার গাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার হয় তার।
এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ৬ অক্টোবর নিহতের মা ঝিনাইদহ জেলা শহরের আরাপপুর গ্রামের মাহফুজা খাতুন বাদী হয়ে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি ঝিনাইদহকে মামলাটি তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন আদালত।
এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে- ঝিনাইদহের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বর্তমানে পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ, সেই সময়কার এএসপি গোপীনাথ কানজিলাল, সদর থানার তৎকালীন ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার, কনস্টেবল মুরাদ, ডিবির এসআই এজাজ, ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি, ঝিনাইদহ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবন কুমার বিশ্বাসসহ ১০ জনকে। সাইদুল করিম মিন্টুকে এ মামলায় ৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
সজীব হত্যা মামলায় অপর আসামিদের গ্রেফতার কিংবা শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়নি বলে জানান সিআইডির পরিদর্শক কামাল হোসেন (মামলার তদন্তকারী)।
তিনি আরও জানান, সিআইডির কাছে থাকা মামলা তদন্তের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া নেই। যে কারণে তদন্ত কার্যক্রম হবে শেষ হবে তা নিশ্চিত করে জানানো যাচ্ছে না।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় সাইদুল করিম মিন্টুকে ২০২৪ সালের ১১ জুন রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার করে তৎকালীন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিবি হারুন অর রশিদ। সেই থেকে কারাগারেই মিন্টু। আগস্ট বিপ্লবের পরে মিন্টুর বিরুদ্ধে নতুন করে আরও ৬টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ থেকে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে আনা হয়।