ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় প্রসাধনী স্টল নারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। মেলায় ঘুরেফিরে, ছবি তুলে ছুটে আসেন প্রসাধনীর স্টলে। যেন প্রসাধনী কিনতেই মেলায় এসেছেন! তবে নকল পণ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

রোববার মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, প্রসাধনী স্টলে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সের নারীরা ভিড় করছেন। কেউ পণ্য দেখছেন। কেউবা পছন্দের প্রসাধনী কোন দেশের তৈরি তা জানতে চাচ্ছেন। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা আগ্রহ নিয়ে জানছেন। পণ্য নকল কিনা সেটি ছিল তাদের অন্যতম প্রশ্ন।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রসাধনীর মধ্যে আইশ্যাডো, হেয়ার জেল, সানক্রিম, আই লাইনার, মাশকারা, কাজল, লিপস্টিক, অলিভ অয়েল, ইমিটেশনের চুড়ি, আংটি, কানের দুল, পায়েল, গলার চেন, হার, নাকফুল, ব্রেসলেট, টিকলি, হাতের বালা নারী ক্রেতাদের পছন্দ। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর। তবে অধিক মুনাফার আশায় একটি চক্র নকল প্রসাধনী মেলায় বিক্রি করছেন। এ ক্ষেত্রে ক্রেতাদের সচেতন হতে হবে। দেখেশুনে কিনতে হবে। নকল পণ্য বিক্রেতাকে আইনের আওতায় আনতে সহযোগিতা করতে হবে।

আকাশ ট্রেডিং কসমেটিক্সের স্টলে বিক্রয় প্রতিনিধি সুমাইয়া আক্তার বলেন, নকল প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহার করলে এলার্জি ও ক্যানসারের ঝুঁকিতে পড়তে হবে। যে কারণে ভালো মানের প্রসাধনসামগ্রী কিনতে হবে। মরিয়ম জুয়েলারির সাদিকা ইসলাম বলেন, কম দামে প্রসাধনী কিনলে তা কখনোই মানে ভালো হবে না।

আফরা কানেকশনের ইলমা সুরাইয়া বলেন, তারা মেলার স্টলে বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনেও অর্ডার নিচ্ছেন। হ্যাভেন হারবাল স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, চোখের নিচের ফোলাভাব, কালো দাগ উঠাতে আইব্যাগও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। পুরুষেরা মেলা থেকে হেয়ারজেল, কেউ কেউ পরচুলাও কিনছেন। মেলায় হারবালের উত্পাদিত প্রসাধনীর চাহিদাও বেশ। জেপি জুয়েলারি স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধি রুমানা খাতুন বলেন, ইমিটেশনের চুড়ি, আংটি, দুল, পায়েল, চেইন, হার, নাকফুল, ব্রেসলেট, টিকলি, বালা দেদার বিক্রি হচ্ছে।

বাণিজ্যমেলা শেষের দিকে এগুচ্ছে, তাই দিন দিন ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েই চলছে। আগে শুধু ছুটির দিনগুলোতে ভিড় থাকলেও এখন অন্য দিনেও মেলা বেশ জমজমাট। রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে এসেছেন গৃহবধূ সিমা আক্তার। তিনি বলেন, মেলা থেকে শাড়ি ও জামার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে প্রয়োজনীয় প্রসাধনী কিনেছেন। পণ্যের দাম একটু বেশি। তবে মান ভালো।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা শিক্ষিকা আরোহী বেগম বলেন, প্রসাধনীর পাশাপাশি মেলায় ভালো মানের ইমিটেশনের অলংকার পাওয়ায় কিনেছি। ইমিটেশনের গহনাগুলোর ডিজাইন খুব পছন্দ হয়েছে। ঢাকার মিরপুর থেকে সপরিবারে মেলায় এসেছেন গৃহবধূ মুক্তা আক্তার। তিনি বলেন, এক বছরের চাহিদা অনুযায়ী মেয়াদ দেখে প্রসাধনী কিনেছি।

মেলার আয়োজক বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরোর সচিব বিবেক সরকার বলেন, মেলায় তরুণী ও নারীদের আগমন বেশি। তাই আগেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কঠোর অবস্থানে। ফলে মেলা মুখরিত হয়ে উঠেছে।

যমুনা ইলেকট্রনিক্সের বিশেষ ছাড় : যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেডের হেড অব সেলস মো. মেজবাহ উদ্দিন আতিক বলেন, ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী মেলায় আমরা উন্নতমানের পণ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি। এর মধ্যে উলে্লখযোগ্য হলো রাইসকুকার, রেফ্রিজারেশন, মাইক্রোওভেন, ইলেকট্রনিক ওভেন, গ্যাস বার্নার, কারিকুকার, ইনফ্রারেড কুকার, রুম হিটার, ভেন্ডার, মিক্সারভেন্ডার ও জুসার, টিভি ও মোটরসাইকেল। এসব পণ্য আমরা বিশেষ ছাড়ে বিক্রি করছি। বিশেষ করে মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশন, ওয়াশিং মেশিন আমরা ১০ থেকে ২৫ পার্সেন্ট পর্যন্ত ডিসকাউন্টে অফার করেছি। মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে ২৫%। কিছু ইনোভেটিভ প্রডাক্ট আমরা এখানে নিয়ে এসেছি। ১০০ ইঞ্চি টিভি বাংলাদেশে এই প্রথম এতবড় টিভি এনেছি। এয়ারকন্ডিশনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন টেকনোলজির কিছু এয়ারকন্ডিশন আমরা নিয়ে এসেছি, সেখানেও ক্ষেত্রবিশেষ ১০ থেকে ১২% ডিসকাউন্ট আছে। তিনি আরও বলেন, বাণিজ্যমেলায় যমুনার পণ্য কেনা অর্থ হচ্ছে আপনি জিতলেন।