Logo
Logo
×

সারাদেশ

চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল

মিলছে না র‌্যাবিস ভ্যাকসিন, বিপাকে রোগী

Icon

চট্টগ্রাম বু্যরো

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৫ পিএম

মিলছে না র‌্যাবিস ভ্যাকসিন, বিপাকে রোগী

চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে মিলছে না বিনামূল্যের র‌্যাবিস ভ্যাকসিন। নগরীর এই হাসপাতালে জলাতঙ্ক টিকা নিতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত রোগী। তবে শনিবার থেকে মজুদ না থাকায় বিনামূল্যের টিকা পাচ্ছেন না তারা। তাদেরকে ফার্মেসি থেকে কিনে এই টিকা দিতে হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। কেবল তাই নয়, বিনামূল্যের সিরিঞ্জও বাইরে থেকে কিনে টিকা নিতে হচ্ছে রোগীদের। 

সংশি্লষ্টরা বলছেন, মরণব্যাধি রোগটির ভ্যাকসিনের মজুদ শেষ হওয়ার আগেই সরবরাহ করা প্রয়োজন ছিল। এমন অবহেলার কারণে দরিদ্র ও নম্নি আয়ের মানুষ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

রোববার নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন আন্দরকিল্লা এলাকায় অবস্থিত ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে চিকিত্সার জন্য জরুরি বিভাগে ভিড় করেছেন আহতরা। প্রথমে তাদের কাছ থেকে কোনো প্রাণী আক্রমণ করেছে ও কেমন আক্রমণ করেছে; সেই তথ্য নিয়ে জলাতঙ্ক ক্যাটাগরি নির্ণয় করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। পরে এক টুকরো সাবান ক্ষতস্থান পরিষ্কারের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় রোগীদের। ফিরে যাওয়ার পর ভ্যাকসিনের জন্য একটি স্লিপ দেওয়া হয় রোগীদের। কিন্তু নির্ধারিত বিনামূল্যের ভ্যাকসিন না থাকায় তাদেরকে টিকা দিতে পারছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা। দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মীর টেবিলে থাকা একটি নোটিশে লেখা আছে, জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন/টিকা সরকারি সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত। রোগীদের নিজ দায়িত্বে টিকা কিনে আনার পরামর্শ দেওয়া হলো।' সেই নোটিশ দেখিয়ে বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এজন্য চারজনকে একত্রিত হয়ে এক ভাওয়েল ভ্যাকসিন কিনে আনতে বলেন তারা। পরে বাধ্য হয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন হাজারী গলির ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন ও সিরিঞ্জ নিয়ে যাওয়ার পর তাদেরকে টিকা দেওয়া হয়। তবে তাত্ক্ষণিকভাবে টাকা না থাকায় অনেকেই ফিরে যান টিকা না নিয়েই। 

কুকুরে কামড় দেওয়া ২২ মাস বয়সী শিশুকে টিকা দিতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সুস্মিতা দেবী বলেন,  আমার শিশুর র‌্যাবিস ভ্যাকসিনের নির্ধারিত দ্বিতীয় ডোজের তারিখ। টিকা দেওয়ার জন্য আনার পর স্বাস্থ্যকর্মীরা জানায়, সরকারিভাবে ভ্যাকসিন নেই। দিতে হলে কিনে আনতে হবে। বিনামূল্যের টিকা হওয়ায় আমি বাসা থেকে টাকা নিয়ে আসিনি। সেজন্য বাচ্চাকে ভ্যাকসিন দিতে পারছি না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, জলাতঙ্ক একটি মরণব্যাধি রোগ। এই রোগের ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে কিনা কিংবা কতদিন চলবে সে বিষয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি রাখার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু অবহেলা করে সেটি করা হয়নি। ভ্যাকসিন না পেয়ে শনিবার থেকে শত শত রোগী আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন। এখানে আমাদের কি করার আছে? 

জানা গেছে, বর্তমানে অনেকের বাসা-বাড়িতে পোষা বিড়াল রয়েছে। খেলতে খেলতে অনেক সময় গায়ে আঁচড় বসিয়ে দেয় এসব প্রাণী। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নগরী ও উপজেলা মিলে প্রতিদিন গড়ে ২০০ রোগী ভ্যাকসিনের জন্য যাচ্ছেন। এদের মধ্যে পোষা বিড়ালের আঁচড়ে আহত হওয়ার সংখ্যা বেশি। 

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক (উপ-পরিচালক) ডা. আবদুল মান্নান যুগান্তরকে বলেন, ভ্যাকসিন শেষ হয়ে যাওয়ায় শনিবার থেকে বিনামূলের ভ্যাকসিন দেওয়া যাচ্ছে না। ভ্যাকসিনের জন্য ঢাকায় সরবরাহকারী পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, সোমবার থেকে সরকারিভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম