যশোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক
যশোর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম
যশোর
জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ
নেতা সাইফুজ্জামান পিকুল এবং পরিষদের কয়েকজন
কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনিয়ম, লুটপাট ও দুর্নীতি তদন্তের
উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানের স্বার্থে
ইতোমধ্যেই চার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে
তলব করা হয়েছে।
গত
১৪ জানুয়ারি দুদকের যশোর জেলা কার্যালয়ের
উপপরিচালক আল-আমিন স্বাক্ষরিত
এ সংক্রান্ত নোটিশ জারি করা হয়।
তবে বিষয়টি রোববার জানাজানি হয়।
দুদক থেকে তলবকৃতরা হলেন- সহকারী প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, অফিস সহায়ক সরোয়ার উদ্দিন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে ওই নোটিশে তিনজনের নাম উল্লেখ থাকলেও প্রধান নির্বাহীর নাম জানানো হয়নি।
দুদকের নোটিশে বলা হয়- সড়ক-মহাসড়কের সরকারি হাজার হাজার গাছ বিক্রি, বিভিন্ন প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা লোপাট, নিয়োগ বাণিজ্য, জমি ইজারা ও দোকান বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ এবং নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে পিকুল। এ অভিযোগের অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হলো। তদন্তের স্বার্থে চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বক্তব্য নেওয়া প্রয়োজন।
ওই নোটিশে ২৩ জানুয়ারি তাদের দুদকে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়। তবে পরবর্তীতে তারিখ পরিবর্তন করে ৩ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আছাদুজ্জামান রোববার বিকালে বলেন, দুদকের ইস্যুকৃত নোটিশ পেয়েছেন। তারা আমাদের বক্তব্য নেবেন।
২০১৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান যশোর জেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান শাহ হাদিউজ্জামান। ওই বছরের ১৭ এপ্রিল উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পিকুল। ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন তিনি। দুই দফায় প্রায় সাড়ে সাত বছর চেয়ারম্যান পদে ছিলেন পিকুল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান এই আওয়ামী নেতা।
অভিযোগ রয়েছে, পরিষদের কয়েকজনকে নিয়ে সিন্ডিকেট করেন পিকুল। যশোর-খুলনা মহাসড়ক, যশোর-ঝিনাইদহ ও যশোর-নড়াইল মহাসড়ক এবং আঞ্চলিক সড়কের হাজার হাজার গাছ বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সিন্ডেকেটটি। যে কোনো প্রকল্প বরাদ্দে তাদের ২৫ শতাংশ কমিশন দিত হতো। এছাড়া ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে সিন্ডিকেটটি। যশোরে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল নির্মাণে সরকারি বরাদ্দ থাকলেও জেলা পরিষদ থেকে একাধিকবার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই টাকা আত্মসাৎ করেছে পিকুল।
শীতবস্ত্র,
ইফতার, ঈদসামগ্রী বিতরণ ও আর্থিক সহায়তার
বরাদ্দের বেশিরভাগ অর্থ আত্মসাৎ করেছে
পিকুল সিন্ডিকেট। এছাড়া পরিষদের মালিকানাধীন খাজুরা বাসস্ট্যান্ড ও টাউন মাঠসংলগ্ন
মার্কেটের দোকান বরাদ্দের নামে প্রায় সাড়ে
৪ কোটি টাকা নিজেদের
পকেটে নিয়েছে তারা।