জোর করে ফসলি জমির মাটি কেটে রাস্তা সংস্কার
দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৮ পিএম
গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প থেকে পেয়েছিলেন রাস্তা সংস্কার ও কালভার্ট তৈরির কাজ। করতে হবে রাস্তায় মাটি ভরাট ও কার্পেটিং এর কাজ। সেই রাস্তায় মাটি ফেলার জন্য বরাদ্দ ছিল সরকারি টাকাও। বলা ছিল, রাস্তার মাটি সরবরাহ করবে কাজ পাওয়া ঠিকাদার; কিন্তু রাস্তার পাশের ফসলি জমির মাটি কেটে করা হচ্ছে রাস্তা। এতে ক্ষতি হচ্ছে কৃষকদের। পাচ্ছে না কোনো ক্ষতিপূরণও। এতক্ষণ বলছিলাম মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের খলসী ইউনিয়নের খালসী গ্রামের কথা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, জোর করে মাটি কেটে নিচ্ছে ঠিকাদার। আর এতে সহায়তা করছে স্থানীয় ইউপি সদস্য। তবে অভিযোগ অস্বীকার করছেন ওই ঠিকাদার। তার দাবি, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়েই কাজ করছেন তিনি।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এলজিইডির ব্যবস্থাপনায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (আরআইআরডিপি-৩) আওতায় খালসীবাজার পালপাড়া থেকে নয়াবাড়ি পর্যন্ত এক হাজার ৪১৫ মিটার রাস্তা ও একটি টি-কালভার্ট তৈরির কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নুরজাহান রিসোর্স ইন্টারন্যাশনাল নতুন টাউন। এই কাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় দুই কোটি ছয় লাখ টাকা। প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা এক মাস ধরে শুরু হয়েছে। চলতি বছরের মার্চে কাজটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, রাস্তার দুপাশে ভেকু দিয়ে ফসলি জমি গর্ত করে মাটি কেটে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। এতে সরিষা, ধান, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি করা হচ্ছে।
কথা হয় ভুক্তভোগী কৃষক রেজ্জাক রহমানের সঙ্গে। ৫৫ বছর বয়সি এই কৃষক বলেন, ‘আমার জমির সরিষা নষ্ট করে রাস্তায় মাটি ফেলা হচ্ছে। ঠিকাদার কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়নি।’ আরেক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বদর উদ্দিন বলেন, ‘আমার জমি থেকে জোর করে মাটি কেটে গর্ত করেছে। আমার ক্ষেতের কলাই নষ্ট করেছে।’ দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রাস্তা দরকার, তাই বলে আমাদের ক্ষতি করে রাস্তা করতে হবে।’
ভুক্তভোগী সালাম বলেন, ‘এই রাস্তার দুপাশের ফসলি জমি নষ্ট করে রাস্তার কাজ করছেন ঠিকাদার। এ কাজে বাধা দিতে গেলে ঠিকাদারের লোকজন রাস্তার কাজ বন্ধের কথা জানান।’
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিন্টু বলেন, ‘এলাকার গণ্যমান্য সবার সঙ্গে আলাপ করেই কাজ শুরু করেছি। তবে জোর করে কারও জমির মাটি কাটা হয়নি।’ মাটি নিজে সরবরাহ করলে আর্থিকভাবে তার ক্ষতি হবে বলে জানান তিনি। আর স্থানীয় ইউপি সদস্য লিটন বলেন, ‘আমাদের রাস্তার দরকার। তাই ঠিকাদার যেমন খুশি কাজ করছেন। আমরা ঠিকাদারকে সহযোগিতা করছি।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ইরাজ উদ্দিন বলেন,
‘রাস্তার পাশের
জমি থেকে মাটি কাটার বিষয়ে আমি জানি না। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’