উলিপুরে ৪১৮ বস্তা টিএসপি কমপ্লেক্স সার জব্দ
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০৭ এএম
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ৪১৮ বস্তা টিএসপি কমপ্লেক্স সার অবৈধ মজুত ও নকল সন্দেহে জব্দ করেছে প্রশাসন।
বিসিআইসির লাইসেন্সবিহীন এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে ১৩৫ বস্তা এবং ওই দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক থেকে মালিকবিহীন ২৮৩ বস্তা সার উদ্ধার করা হয়।
বিপুল পরিমাণে এই সার কিভাবে লাইসেন্সবিহীন ব্যবসায়ীর কাছে আসে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সার ডিলাররা। উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পশ্চিম মাথা গোল চত্বর সংলগ্ন মেসার্স লিমন ট্রেডার্স নামক বালাইনাশক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, থেতরাই বাজারের খুচরা বালাইনাশক ব্যবসায়ী রওশন আলী নওশাদের প্রতিষ্ঠান মেসার্স লিমন ট্রেডার্সে গত মঙ্গলবার বিকালে ট্রাক ভর্তি সার আসে। এ সময় ট্রাক থেকে ১৩৫ বস্তা টিএসপি সার দোকানে নামানো হয়। ডিলার না হয়েও ট্রাক ভর্তি সার দোকানে নামানোর বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেন।
পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে ১৩৫ বস্তা সার জব্দ করেন। এ সময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ২৮৩ বস্তা সারের মালিক খুঁজে না পাওয়ায় সেগুলোও জব্দ করা হয়।
পরে ওই সারগুলো উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে উপজেলা পরিষদের গুদামে রাখা হয়। টিএসপি কমপ্লেক্স সার টিএসপি বাংলা সার হিসাবে পরিচিত এবং বাজারে এই সারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
উপজেলার একাধিক বিসিআইসির সার ডিলারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত চার মাস থেকে টিএসপি কমপ্লেক্সের সারের বরাদ্দ নেই। এছাড়া ডিলারদের প্রতি মাসে এই সার সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ বস্তা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
বাজারে টিএসপি কমপ্লেক্সের চাহিদা থাকায় তা দ্বিগুণ লাভের আশায় ওই সারগুলো অবৈধভাবে এনে মজুদ করা হচ্ছিল বলে তাদের ধারণা। বিপুল পরিমাণের এই সার কিভাবে লাইসেন্সবিহীন ব্যবসায়ীর কাছে আসে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সার ডিলাররা।
মেসার্স লিমন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী রওশন আলী নওশাদ জানান, আমি খুচরাভাবে সার বিক্রি করি। আমার ছোট প্রতিষ্ঠানে ১৩৫ বস্তা সার থাকায় প্রশাসন তা জব্দ করে নিয়ে যান। তবে তিনি স্বীকার করেন, সার ক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য যে লাইসেন্স লাগে সেটি তার নেই। এটি টিএসপির বাংলা সার বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি দাবি করেন, সারগুলো চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে আসা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, মেসার্স লিমন ট্রেডার্সের মালিক বালাইনাশক খুচরা ব্যবসায়ী হয়ে তিনি টিএসপি কমপ্লেক্স সার অবৈধভাবে মজুত করেছেন। এছাড়া সারগুলো আসল কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ কারণে সারগুলো জব্দ করা হয়েছে। সারের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাজী মাহমুদর রহমান জানান, অবৈধভাবে সার মজুতের অভিযোগে তা জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষায় যদি সারগুলো নকল হিসেবে শনাক্ত হয় তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।