Logo
Logo
×

সারাদেশ

জেলা যুবলীগ আহবায়কের বহনকারী গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, ডিম নিক্ষেপ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম

জেলা যুবলীগ আহবায়কের বহনকারী গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, ডিম নিক্ষেপ

আদালত থেকে মানিকগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহবায়ক আবদুর রাজ্জাক রাজাকে কারাগারে নেওয়ার সময় বহনকারী প্রিজনভ্যান আটকে বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। এ সময় তার ফাঁসির দাবিতে স্লোগানে উত্তাল হয়ে পড়ে আদালত চত্বর।

পাশাপাশি তাকে লক্ষ্য করে প্রিজনভ্যানে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করেন ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। পৌনে এক ঘণ্টা পর প্রিজনভ্যানটি তাকে নিয়ে জেলা কারাগারের উদ্দেশে রওনা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ শহরে আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে যুবলীগের এই জেলা আহবায়কের পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়ায়নি।

মানিকগঞ্জ সদর থানার পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৮ জুলাই এবং ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র হামলা করেন। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন। এছাড়া ৪ আগস্ট জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়।

এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সদর থানায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর যুবলীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক আত্মগোপনে চলে যান। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়।

অবশেষে বুধবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে থেকে গ্রেফতার করে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। রাতেই তাকে সদর থানায় আনা হয়।

এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে ২টার দিকে পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় একটি হায়েস গাড়িতে করে তাকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হয়। আদালত প্রাঙ্গণে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

আসামি রাজ্জাকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তবে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে আবদুর রাজ্জাকের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি।

বেলা আড়াইটার দিকে আদালত থেকে কারাগারে নিতে আসামি যুবলীগের নেতা রাজ্জাককে একটি প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। সেখানে উপস্থিত ছাত্র-জনতা তাকে লক্ষ্য করে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এরপর প্রিজন ভ্যানটির গতিরোধ করে সামনে দাঁড়িয়ে আসামির ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্র-জনতা।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বিক্ষুব্ধ ছাত্র প্রতিনিধিদের শান্ত হওয়া এবং গাড়িটি গন্তব্যে যেতে দিতে অনুরোধ জানান। তবে ছাত্র-জনতা গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পৌনে এক ঘণ্টা পর ছাত্র-জনতা সরে গেলে রাজ্জাককে বহনকারী গাড়ি জেলা কারাগারের উদ্দেশে রওনা হয়।

আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ছাত্র প্রতিনিধি হাসনা হেনা ও আশরাফুল ইসলাম ওরফে রাজু। তারা বলেন, যুবলীগের নেতা আবদুর রাজ্জাক একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। গত ১৮ জুলাই এবং ৪ আগস্ট রাজ্জাকের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী তাদেরসহ শিক্ষার্থীদের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। এতে তারাসহ অনেকে মারাত্মক আহত হন। তারা রাজ্জাকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ইউসুফ আলী বলেন, আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী ছিলেন না। বাদীপক্ষের আইনজীবীদের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি আমান উল্লাহ বলেন, ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামি রাজ্জাককে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রিমান্ডের ওপর পরে শুনানি হবে বলে তিনি জানান।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম