Logo
Logo
×

সারাদেশ

মেয়ের মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ‘ঘরজামাই’ বিলাল

Icon

আব্দুল মান্নান, ভাঙ্গা (ফরিদপুর)

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪০ পিএম

মেয়ের মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ‘ঘরজামাই’ বিলাল

নিজের কোনো জমিজমা নেই। থাকেন শ্বশুরবাড়িতে। পেশায় মুদি দোকানি। তিন মেয়ের দায়িত্ব তার ঘাড়ে। এর মধ্যে স্ত্রীও অসুস্থ, করতে পারে না কোনো কাজ। স্বল্প আয়ে বড় মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন। সেই মেয়ে এবার চান্স মেয়েছে মেডিকেলে। খুশির খবর হলেও কপালে ভাঁজ ‘ঘরজামাই’ এই মুদি দোকানির।

বলছিলাম ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ড পূর্ব হাসামদিয়া গ্রামের মুদি দোকানি শেখ বিলাল হোসেনের কথা। তার বড় মেয়ে ২১ বছর বয়সি ইমা আক্তার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এই খবরে আনন্দিত গ্রামবাসী। তবে, মেডিকেলে চান্স পাওয়া ইমা আক্তারের পরিবার ভর্তি ও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার টাকা যোগাড়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমার কোনো জায়গা-জমি নাই। শ্বশুরবাড়িতে একটি টিনের ঘর তুলে পরিবার নিয়ে থাকি। মেয়েকে ঠিকমতো লেখাপড়ার খরচ দিতে পারি নাই। অনেক কষ্ট করে সে লেখাপড়া করেছে। আমার শ্বশুরের স্বপ্ন ছিল ইমা ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের সেবা করবে।’

এই মুদি দোকানি আরও বলেন, ‘আমার তেমন আয় নাই। স্ত্রীও অসুস্থ। টাকা পয়সার অভাবে মেজো মেয়ে তাইবার লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছি। দোকান চালিয়ে সামান্য কিছু টাকা আয় করি। এখান থেকে সংসার ও মেয়েকে কিছু খরচ দেই। ইমা যখন ফোন করে আমাকে বলে, বাবা আমি মেডিকেলে চান্স পেয়েছি, তখন আনন্দে দীর্ঘক্ষণ কান্না করেছি।’

অসহায় এই বাবা আরও বলেন, ‘আগামী মাসে ইমাকে ভর্তি করাতে হবে। বই-খাতা কিনতে হবে। এখন আমার কাছে কোনো টাকা নাই যে মেয়েকে ভর্তি করাবো। দুশ্চিন্তায় আছি। এলাকাবাসীসহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

মেডিকেলে চান্স পাওয়া ইমা বলেন, আমার বাবা প্রথমে ড্রাইভার ছিলেন। এরপর গ্রামের মধ্যে ছোট্ট একটা দোকান ভাড়া নেন। আমার বাবা আমাকে যে টাকা দিতেন তাতে আমার এক বেলার খাবার হতো। কোনো কোনো মাসে টাকা দিতে পারতেন না। তারপরও আমি হাল ছাড়িনি। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি।

তিনি আরও বলেন, ‘মেডিকেলে চান্স পেয়েও আনন্দে নেই। ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছি। বই-খাতা, ভর্তি সব মিলিয়ে অনেক টাকার দরকার। আমার বাবার পক্ষে এতো টাকা দেওয়া সম্ভব না।’

এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ইমার বিষয়টা আমি শুনেছি। ভর্তিসহ যে কোনো বিষয়ে যদি তার কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, আমি সাধ্য মতো তার পাশে দাঁড়াব।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম