এক যুগ পরও বিএনপি নেতা হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়নি
কাজী সোহেল, দোহার (নবাবগঞ্জ)
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:২০ পিএম
২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকার দোহার উপজেলায় বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ ব্যাপারীকে গুলি করে হত্যা করেছিল সন্ত্রাসীরা। ঘটনার এক যুগ পার হলেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী ও নিহতের পরিবার।
মামলার বাদী মো. জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন, দোহার থানায় হত্যা মামলার নাম্বার ১০/১/২০১৩। আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের হস্তক্ষেপ ছিল মামলার তদন্তে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাজ সম্পূর্ণ না করে প্রথমে ডিবি পুলিশ ও সর্বশেষ সিআইডির কাছে হস্তান্তর করে। সেখানেও হস্তক্ষেপ করেন প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া তদন্ত রিপোর্টে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। যে কারণে এখনো আমরা সঠিক বিচার পাইনি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ১৬ বছরের যত হত্যা, গুম, খুন ও নির্যাতনের সব বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবেন। আমার বাবার হত্যা মামলায় চার্জশিট সংশোধন করে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ এবং পুনরায় চার্জশিট করে সঠিক বিচার দাবি করছি। হত্যার সঙ্গে জড়িত আসামি, সহযোগী ও অর্থদাতাদের চার্জশিটে সংযুক্ত করতে হবে।
আব্দুর রশিদ ব্যাপারীর ভাতিজা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, মামলার আসামি নয়নকে গ্রেফতার করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সে সময় নয়ন স্বীকারও করেছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের ভাই মোতালেব খানের হুকুমে আমার চাচাকে সে গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু নয়ন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি পেশ করেননি। উল্টো জামিনে বেরিয়ে এখন পলাতক রয়েছে নয়ন।
এ বিষয়ে দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম বলেন, এ ঘটনায় আপাতত পুলিশের কিছু করার নেই। তবে বাদী পক্ষ এজাহারে সন্তুষ্ট না হলে আদালতে পুনঃতদন্তের জন্য আবেদন করতে পারেন।
২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় দোহার উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ ব্যাপারী মসজিদে যাচ্ছিলেন। এ সময় দু-তিনজন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলযোগে এসে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওইদিন রাত ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আব্দুর রশিদ।
ওই রাতেই ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে দোহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার চারদিন পর খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। সে সময় দোহার থানার তৎকালীন ওসির নেতৃত্বে পুলিশ মানববন্ধনকারীদের কাছ থেকে ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।