রাজশাহীতে অপহৃত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় অপহরণের মূল হোতা আব্দুর রশিদ (৫০) ও মীম হোসেন (৩০) নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর রাজপাড়া থানার বিলসিমলা এলাকার রায়না কমপ্লেক্স নামের একটি ভবন থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে র্যাব-৫ ও চন্দ্রিমা থানা পুলিশ। ।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অপহৃত অমি ও অপহরণকারী দুজন রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠ লোক। জমি ও ফ্ল্যাট বিক্রির টাকার লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।
রশিদের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা যায়, রশিদ ও অমি নগরীর ডাবতলা এলাকার একটি বিরোধপূর্ণ জমি সাবেক মেয়রের প্রভাব দেখিয়ে দখলে নেন। এই জমি দখল বাবদ সাবেক মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরসহ কয়েকজনকে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল তাদের। প্লট ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেন অমি। তবে ৫ আগস্টের পর সাবেক মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতারা আত্মগোপন করায় আর কাউকে টাকা দেননি তিনি। বিষয়টি সম্প্রতি জানতে পারে রশিদ এবং টাকা উদ্ধারের জন্য অমিকে চাপ দেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন সে। ১৫ জানুয়ারি রাতে রশিদের লোকজন অমিকে তুলে নিয়ে আটকে রাখেনে এবং টাকা দাবি করেন।
অমির বাবা আমির হোসেন শুক্রবার সকালে থানায় দেওয়া অভিযোগে বলেছেন, তার ছেলে পেশায় দন্ত চিকিৎসক। নগরীর বনগ্রাম ব্যাংক টাউন এলাকায় বসবাস করেন। ১৫ জানুয়ারি রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে সিএনজি করে গ্রামের বাড়ি বাগমারা থেকে নগরীর বনগ্রামের বাসায় ফিরছিলেন। বাসায় প্রবেশের সময় ৭ থেকে ৮ জনের একটি সশস্ত্র দল তাকে অপহরণ করে আব্দুর রশিদের বিলসিমলার বাসায় নিয়ে যায়। ব্যাংকের চেক ও খালি স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় এবং তার কাছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করে; মারধর করে। পরে পরিবারের লোকেরা র্যাব-৫ ও চন্দ্রিমা থানায় অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে উদ্ধার করা হয়।
চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান জানান, অপহৃত অমির বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। অপহরণ চক্রের মূল হোতা আব্দুর রশিদ ও তার গাড়ি চালককে আদালতে চালান করা হয়েছে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এর আগে মাদকাসক্তি ও টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়ার অভিযোগে ২০২২ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কার করা হয় অমিকে।