রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ৫৪ বছর ধরে এক ব্রীজের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান কুটিরঘাট এলাকার বাসিন্দারা। তবে এখনো পূরণ হয়নি সে দাবি।
উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম নদের নাম ঘাঘট। যার পশ্চিম ও পূর্ব দিকের ১০টি গ্রামে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। ব্রীজ নির্মাণ না হওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা সমাবেশ থেকে এই ব্রীজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
ব্রীজটি নির্মাণ হলে যাতায়ত ব্যবস্থায় ১০ কিলোমিটার দূরত্ব কমার পাশাপাশি খরচ কমে যেত স্থানীয়দের। তবে প্রতিবছর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করছেন তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘ এই সাঁকোটি নির্মাণ করা কষ্টকর। নদের প্রশস্ততা বেশি হওয়ায় বেশ নড়বড়ে আবস্থার মধ্য দিয়ে লোকজন প্রতিদিন যাতায়ত করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘাঘট নদ পার হচ্ছেন শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা শফিয়ার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, দোকানের ভারি মালামাল কিংবা মোটরযান আরোহীরা বাধ্য হয়ে বেতগাড়ী ইউনিয়ন হয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে চলাচল করে আসছেন। কারণ ভারি মালামাল নিয়ে সাঁকো দিয়ে পারাপার করা যায় না। তাই ভোগান্তিরও শেষ নেই।
স্থানীয় দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আব্দুল মোমিন বলেন, খুব কষ্ট করে সাঁকোর ওপর দিয়ে নদী পারাপার হতে হয় প্রতিদিন।
আলমবিদিতর ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ জানান, ইউনিয়নের অন্তত ৫০০ জন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এই সাঁকো দিয়ে পারপার করেন। ৫৪ বছর ধরে অনেক জনপ্রতিনিধি ভোটের সময় আশ্বাস দিলেও নির্বাচিত হলে ভুলে যান।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আখিনুর ইসলাম বলেন, তিস্তা সেচ ক্যানেলের পানি ঘাঘট নদের নিচ দিয়ে প্রবাহের জন্য একটি সাইফন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে এখানে মানুষের চলাচলের জন্য একটি ফুট ব্রীজ নির্মাণ করা যেতে পারে। ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাব আগে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফান্ড না থাকার কারণে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম বলেন, সাঁকোটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেলের সাইড। এই সাইড দিয়ে লোকজন চলাচল করে। আমাদের রাস্তা উজানে। সেই রাস্তা নদীতে ভেঙে গেছে। এলজিইডির পক্ষ থেকে মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু যেখান দিয়ে ব্রিজ হওয়ার কথা সেখানকার দূরত্ব অনেক, যার কারণে ব্রিজ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না।