৬৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
টিপু হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া ৩ জন গ্রেফতার
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫১ পিএম
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কাছে দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার গোলাম রব্বানী টিপু (৫৫) হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন শাহরিয়ার পাপ্পু (২৯), গোলাম রসুল (২৫) ও সুমি আক্তার। মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকা থেকে মঙ্গলবার তাদের গ্রেফতার করা হয়।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) রহমত উল্লাহ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গ্রেফতাররা হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। সুমি আক্তারকে পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি হত্যার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। অন্য দুজন গুলি করেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমেদ পেয়ারের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে অংশ নেয় কক্সবাজার জেলা পুলিশ এবং সিলেটের স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
অভিযানের বিষয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ বলেন, খুলনার সাবেক কাউন্সিলর টিপু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামিদের কক্সবাজারে আনা হচ্ছে। বিস্তারিত তথ্য সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে।
গত ৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। টিপু একটি ব্যক্তিগত কাজে কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুলির শব্দে পর্যটক এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সরাসরি গুলি চালানোর ঘটনায় সুমি আক্তারসহ তিনজন সম্পৃক্ত ছিলেন। ঘটনার পরপরই তারা পালিয়ে যান।
হত্যার নেপথ্য কারণ : হত্যার নেপথ্য কারণ এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশের ধারণা, টিপুর ব্যক্তিগত শত্র“তা, রাজনৈতিক বিরোধ বা ব্যবসায়িক কোনো বিরোধ এই হত্যার পেছনে থাকতে পারে। গোলাম রব্বানী টিপু কাউন্সিলর থাকাকালে খুলনায় বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন। তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও বহুবার বিতর্কের মুখে পড়েছিল।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই কক্সবাজার জেলা পুলিশ, র্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থা ঘটনাস্থল থেকে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবৃতি এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হয়। গ্রেফতার সুমি আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই হত্যাকাণ্ড কক্সবাজার ও খুলনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল পর্যন্ত এ ঘটনার দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, গোলাম রব্বানী টিপু হত্যাকাণ্ডটি একটি সুপরিকল্পিত এবং চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই হত্যার পেছনের সব ঘটনা উদঘাটন এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে কাজ করছে।