
প্রিন্ট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৯ পিএম

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম

দৈনিক যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সেচ শাখার প্রধান অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানের দপ্তরে এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া ‘ভূগর্ভস্থ সেচনালা বর্ধিতকরণের মাধ্যমে সেচ এলাকার সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) শহীদুর রহমানের দপ্তরেও অভিযান চালানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে এ অভিযান চালান দুদক কর্মকর্তারা।
দুদকের দলটির নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন। অভিযানে ছিলেন উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন এবং উপ-সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান।
তারা জাহাঙ্গীর আলম খানের দপ্তরে বিএমডিএর গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র দেখেন। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর সোমবার দৈনিক যুগান্তরের তৃতীয় পৃষ্ঠায় ‘বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাতিল হচ্ছে ৪ হাজার অপারেটরের নিয়োগ’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
উল্লেখ্য, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় বিএমডিএর ১৬ হাজারের বেশি গভীর নলকূপ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সব অপারেটরের নিয়োগ বাতিল করা হয়। এরপর নতুন অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এসব নলকূপের অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পেতে ২৩ হাজার ৭৫২ জন আবেদন করেন। মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের পর প্রায় চার হাজার জনকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। এ তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোরে বিএমডিএর জোন কার্যালয় ঘেরাও, এমনকি কার্যালয়ে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এর ফলে মনোনীত হওয়া চার হাজার অপারেটরের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার পুরনো আবেদন থেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জানতে চাইলে বিএমডিএর সেচ শাখার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে থাকার সংখ্যাটি চার হাজার হবে না। বড়জোর ৫ থেকে ৬ শতাংশ হতে পারে। যাদের ব্যাপারে অভিযোগ এসেছে, সেগুলো আটকে আছে। দুদক এসে নথিপত্র দেখেছে। কিছু নথিপত্র চেয়েছেও। নথিপত্র সরবরাহের জন্য আমি একটু সময় নিয়েছি।
এদিকে সেচ শাখার অভিযানের পর দুদক দল বিএমডিএর ‘ভূগর্ভস্থ সেচনালা বর্ধিতকরণের মাধ্যমে সেচ এলাকার সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) শহীদুর রহমানের দপ্তরে যান। এই কর্মকর্তা ১৯ কোটি টাকার পাইপলাইন স্থাপনের কাজ ঠিকাদারদের কাছে ‘বিক্রি’ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ভিত্তিতেই দুদক দল সেখানেও অভিযান পরিচালনা করে।
জানতে চাইলে পিডি শহীদুর রহমান বলেন, যে ১৯ কোটি টাকার কাজ টাকার বিনিময়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সঠিক নয়। কারণ ওই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় শেষই হয়নি। কোনো ঠিকাদারকে কার্যাদেশও দেওয়া হয়নি। দুদক দলকে তিনি এ সংক্রান্ত নথিপত্র দেখিয়েছেন।
অভিযান শেষে সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, কর্মকর্তারা তাদের স্বপক্ষে কাগজপত্র দেখিয়েছেন। অপারেটর নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। এগুলো হাতে পাওয়ার পর বিশ্লেষণ করা হবে। এরপর প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।