নাটোরে ৫২ ইউনিয়নের প্রায় সব চেয়ারম্যান আত্মগোপনে

নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৮ পিএম

নাটোর জেলার ৫২টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় সবটিতে একদলীয় ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী অনুসারীরা। যাদের ২-৪ জন ছাড়া সবাই এখনো আত্মগোপনে। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতের কার্যক্রম পড়ছে হুমকির মুখে।
সোমবার গ্রাম আদালতের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে জেলায় অংশীজনদের অংশগ্রহণে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।
সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. শামীম হোসেন বলেন, ইউএনডিপির রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ৯৬ শতাংশ বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে এবং ৯৬ শতাংশ মানুষ গ্রাম আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে সন্তুষ্ট।
নাটোর জেলার ৫২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৮টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চলমান আছে, অবশিষ্ট ১৪টি ইউনিয়নে অতি দ্রুত কার্যক্রম শুরু করা হবে। গ্রাম আদালত আইন-২০০৬ অনুযায়ী অনধিক তিন লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারি ও দেওয়ানি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সব ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রাম আদালত কাজ করছে।
গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগ করতে হয় না, মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা ফি প্রদান করে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে অল্প সময়ে, অল্প খরচে সঠিক বিচার পাওয়া সম্ভব। মাত্র ১০ টাকা ফি প্রদান করে ফৌজদারি ক্ষেত্রে চুরি, দাঙ্গা, প্রতারণা, ঝগড়া বিবাদ, কলহ বা মারামারি, মূল্যবান সম্পত্তি আত্মসাৎ করা, অন্যায় নিয়ন্ত্রণ ও আটক, ভয়ভীতি বা হুমকি দেওয়া এবং কোনো নারীর শালীনতাকে অমর্যাদা বা অসম্মান করার ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত কাজ করে।
অপরদিকে ২০ টাকা ফি প্রদান করে পাওনা টাকা আদায়, স্থাবর সম্পত্তি দখল থেকে উদ্ধার, অস্থাবর সম্পত্তি উদ্ধার বা তার মূল্য আদায়, কোনো অস্থাবর সম্পত্তি জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্যে ক্ষতিপূরণ আদায়, গবাদিপশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণ, কৃষি শ্রমিকদের পরিশোধযোগ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায়, স্ত্রী কর্তৃক বকেয়া ভরণপোষণ আদায় নিষ্পত্তি করে গ্রাম আদালত।
এদিকে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে গ্রাম আদালতে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, অল্প সময়ে স্বল্প খরচে স্থানীয় বিরোধ নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম প্রশংসিত। এ আদালতের সুফল পেতে প্রচারণার মাধ্যমে আদালতকে আরও সক্রিয় করতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, নাটোর প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘আলো’র নির্বাহী পরিচালক শামীমা লাইজু নীলা।