Logo
Logo
×

সারাদেশ

চারঘাটে ১০ ভাটার নয়টিরই নেই ছাড়পত্র

Icon

চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৯ এএম

চারঘাটে ১০ ভাটার নয়টিরই নেই ছাড়পত্র

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে ইটভাটা। এসব ইটভাটার নেই লাইসেন্স। নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ফসলের মাঠ উজাড় করে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা।

উর্বর জমির টপ সয়েল কেটে অবাধে এসব ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে ইট। প্রশাসন পরিবেশ দফতরের কর্মকর্তাদের মানিয়ে বছরের পর বছর চলছে এসব অবৈধ ইটভাটার ব্যবসা। মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযান চললেও বন্ধ হয়নি একটি ইটভাটাও।

প্রশাসনের এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন এলাকাবাসী। তবে পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

রাজশাহী পরিবেশ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার চারঘাট উপজেলায় ১০টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার মধে মাত্র একটি ইটভাটার লাইসেন্স পরিবেশ ছাড়পত্র রয়েছে। বাকি ৯টি ইটভাটার কোনো ছাড়পত্র নেই।

জানা যায়, অবৈধ এসব ইটভাটা বছরের পর বছর চলছে স্থানীয় প্রশাসন পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে। চারঘাটের এসব ইটভাটার প্রায় সবই ফসলি মাঠ আমবাগান কেটে বসতবাড়ি বিভিন্ন স্কুল কলেজের অতি সন্নিকটে গড়ে তোলা হয়েছে।

উপজেলার অনুপমপুর, মিয়াপুর, হলিদাগাছী ইউসুফপুরসহ কয়েকটি এলাকার একাধিক ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, এসব ইটভাটার আশেপাশে ঘনবসতি ফসলের মাঠ। এছাড়াও ইটভাটার খুব কাছাকাছি স্থানে রয়েছে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা এসব ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ফসলি জমি কেটে পুকুর বানিয়ে সেখান থেকে মাটি কেটে এনে তৈরি হচ্ছে ইট। আর ভাটায় মাটি আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে শত শত ট্রলি ট্রাক্টর। এসব ট্রাক্টর থেকে মাটি ঝরে পড়ে চারঘাটের আঞ্চলিক সড়কের অবস্থা এখন করুণ পরিনতি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সড়কগুলো।

পরিবেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে ইট প্রস্তুত ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু চারঘাটের কোথাও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। তিন ফসলি উর্বর জমির টপ সয়েল কেটে প্রশাসনের নাগের ডগায় অবাধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। গ্রামীণ সড়কগুলো দিয়ে পরিবহণ করা হচ্ছে মাটি ইট। এতে শুধু ফসলি জমিই নষ্ট হচ্ছে তা নয়, নবনির্মিত সড়কগুলো ভেঙ্গে মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

উপজেলার ইউসুফপুর এলাকার জনবসতিপুর্ণ এলাকায় অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা ইটভাটা মালিক মাজদার রহমান বলেন, শুধু আমার ইটভাটার লাইসেন্স নেই এমনটা নয়। রাজশাহী জেলার অধিকাংশ ইটভাটারই লাইসেন্স নেই। আমি পরিবেশ অধিদফতর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেই ইটভাটা পরিচালনা করছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান বলেন, আইনে আছে ফসলি জমিতে কোনোভাবেই ইটভাটা তৈরি করা যাবে না। তবে চারঘাটে অধিকাংশ ইটভাটা তৈরি হয়েছে দুই বা তিন ফসলি জমিতে। অনাবাদি পরিত্যক্ত জমিতে ইটভাটা করা গেলেও দেখতে হবে এতে পার্শ্ববর্তী ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কি না।

রাজশাহী জেলা পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শক নীল রতন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে চারঘাটে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা ইটভাটায় অভিযান চালানো হবে। ইটভাটা বন্ধসহ আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম