পুলিশের বিরুদ্ধে মাদক দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে লাল মিয়া (৫২) নামের এক ব্যক্তিকে মদের বোতল দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগি দিনমজুর লাল মিয়ার পরিবার ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ী গ্রামে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ও ইউনুছ আলী বলেন, দিনমজুর লাল মিয়াকে কখনো অবৈধ ব্যবসা করতে দেখি নাই। তিনি একজন নিরীহ মানুষ। সারা বছর কাজ করে খান। আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই, চক্রান্তমূলকভাবে তাকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তার সঠিক বিচার চান।
লাল মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আকতার বলেন, বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে রৌমারী থানার একদল পুলিশ আমার বসতবাড়ি ঘিরে ধরে। পরে ঘরে ঢোকার জন্য পুলিশ ডাকাডাকি করতে থাকে। তখন আমি পুলিশকে বলছি, কেন আমার বাড়িতে আসছেন। তখন পুলিশ আমাকে ধমক দিয়ে বলে, আপনার স্বামী মদের কারবার করে এবং তার বিরুদ্ধে অনেক রিপোর্ট আছে। আমি বলি, আমার স্বামী তো কোনো অবৈধ ব্যবসা করে না। পরে ঘরের দরজা খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ একটি মদের বস্তা নিয়ে করে ঘরে ঢোকে। আমি বলি, আমার স্বামী তো মদের কারবার করে না। তাহলে আপনারা মদের বস্তা নিয়ে কেন ঘরে ঢুকছেন? এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে লাথি মারে পুলিশ। আমার পোলা বিদেশ থেকে ৫ লাখ টাকা জমি কেনার জন্য পাঠায়ছে। ব্যাংক থেকে ওই টাকাগুলো ঘরে ট্রাংকে রাখছি, পুলিশ ট্রাংকের তালা ভেঙে সেই টাকা নিয়ে গেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
ভুক্তভোগী লাল মিয়ার ছেলে রাকিবুল ইসলাম জানান, আমার পরিবারে কেউ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত না। আমরা দিনমজুরি কাজ করে খাই। পুলিশ আমার বাবাকে অন্যায়ভাবে মদের বোতল দিয়ে আটক করেছে। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আরসাদ হোসেন হেলাল বলেন, পুলিশ এখান থেকে মাদক সহকারে লাল মিয়াকে ধরে নিয়ে গেছে। এ এলাকায় বসবাস করছি আমরা, জীবনেও কোনোদিন দেখিনি লাল মিয়া বিড়ি সিগারেট খায়। তারপরও মদের কার্টন নিয়ে তাকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে গেল, এটা আমাদের এলাকাবাসীর ক্ষোভ।
তিনি বলেন, একজন নিরীহ মানুষকে এতো বড় সাজার মধ্যে কে বা কারা এই চক্রান্ত করে ফেলাইলো। এলাকাবাসীর পক্ষে আমরা এর নিঃশর্ত মুক্তি চাই। এর তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।
এ বিষয়ে রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, লাল মিয়ার বাড়ির রান্নাঘর থেকে মদ পেয়েছি। ওই বাড়ি থেকে দীর্ঘদিন যাবত মাদক পাচারের ব্যাপারে সহযোগিতা করে আসছে এবং সেখানে মাদক মজুদ রাখে। আমরা সেখানে মাদক পেয়েছি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘরের এক কোনে গিয়ে লুকায় লাল মিয়া। পরে তাকে মাদকের মামলা দিয়ে কুড়িগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়।