পাউবোর বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতি
মানববন্ধনের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ
যুগান্তর প্রতিবেদন, তাহিরপুর
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৯ পিএম
চলতি মৌসুমে হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ পিআইসির কমিটি গঠনে ঘুস দুর্নীতি অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন শুরুর প্রাক্কালেই ছাত্র সমাজের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে তাহিরপুর উপজেলা সদরে উপজেলা প্রশাসন,পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুবিধাভোগীরা ওই হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে মানববন্ধন আয়োজকরা অভিযোগ করেন।
প্রসঙ্গত, জেলার তাহিরপুরে চলতি মৌসুমে হাওরের বোরো ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪৬টি প্রকল্প কমিটি (পিআইসি) গঠন শেষ হয়েছে ইতিমধ্যে।
পরবর্তীতে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) দাপ্তরিক ফেসবুক আইডিতে প্রকল্প কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাহিরপুরের দায়িত্বে থাকা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মনির হোসেন জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মেরামত,সংস্কার কাজে তাহিরপুর উপজেলার শনি, মাটিয়ান, মহালিয়া, বর্ধিত গুরমা,আঙ্গারুলি হাওরে ৭৬টি প্রকল্পে ১২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কয়েকটি বাঁধের নির্মাণ কাজও চলমান রয়েছে বলেও জানান মনির হোসেন।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন ভবন সংলগ্ন এলাকায় সচেতন ছাত্র সমাজের ব্যানারে বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের বরাদ্দের আড়ালে প্রকল্প কমিটি গঠনে নিরব ঘুস, দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধন শুরুর প্রাক্কালে উপজেলা প্রশাসেন ও পাউবোর সুবিধাভেগীরা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালিয়ে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়।
বাধা দিতে গেলে ফুয়াদ নামের একজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। হামলার ঘটনার পর উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তাহিরপুরে বিএনপির কিছু সুবিধাভোগী নেতা পর্দার আড়ালে আগাম ঘুস নিয়ে উপজেলা প্রশাসন, পাউবোর মাধ্যমে পতিত আওয়ামী লীগের পুরনো সুবিধাভোগীদের দিয়েই অতীতের ন্যায় হাওরের বরাদ্দ লুটেপুটে নিতে পিআইসি গঠনের নামে ফাইল ওয়ার্ক করেছেন।
প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে নীতিমালা না মেনে ঘুস বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রকল্প কমিটি গঠন করায় আমরা প্রতিবাদ জানাতে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছিলাম। মানববন্ধন শুরু করার প্রাক্কালেই আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে ব্যানার ছিনিয়ে নেয় উপজেলা প্রশাসন ও পাউবোর সুবিধাভোগীরা। এসময় ছাত্র সমাজের নেতারা ইউএনওর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন।
মঙ্গলবার ইউএনও মো. আবুল হাসেমের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, শুনেছি ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী মানববন্ধন করতে চেয়েছিল। কিন্তু ক্যান্টিনে বসা বিএনপির কিছু নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কথাকাটাকাটি হয়।
ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়া কিংবা হামলার ঘটনা আমার জানা নেই জানিয়ে ইউএনও বলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।