চিকিৎসকের ভুলে পথে বসে গেলেন খামারি
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম
নাটোরের বড়াইগ্রামের পারকোলে চিকিৎসকের ভুলে ৩১০টি হাঁস মারা গেছে। সোমবার বিকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই খামারের হাঁসগুলো মারা যায়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে আরও ৩৬০টি হাঁস। এতে খামারি ফরজ আলীর রীতিমতো পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারি রোববার সন্ধ্যায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী খামারির অভিযোগ, স্থানীয় পল্লী পশু চিকিৎসক শরীফুল ইসলামের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় ইতোমধ্যেই তার পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। অবশিষ্ট হাঁসগুলো মারা গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ১০ লাখে দাঁড়াবে বলে তার দাবি।
জানা গেছে, উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের পারকোল গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে ফরজ আলী ৭-৮ মাস আগে একদিনের বাচ্চা কিনে বাড়িতেই হাঁসের খামার গড়ে তোলেন। ১৫-২০ দিন আগে হাঁসগুলো ডিম দেওয়া শুরু করে। প্রচণ্ড শীতে হাঁসগুলোর হালকা স্বর্দি লাগে। এতে তিনি ওষুধ দেওয়ার জন্য বনপাড়া এলাকার পল্লী চিকিৎসক শরীফুল ইসলামের কাছে যান। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি ভবিষ্যতেও আর স্বর্দি লাগবে না জানিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে সব হাঁসকে এন্টিবায়োটিক ওষুধ দেন। ওষুধ দেওয়া শেষ হতে না হতেই হাঁসগুলো অসুস্থ হয়ে একে একে মরতে শুরু করে। পরে তিনি দ্রুত সেখান থেকে চলে যান। শনি, রোব ও সোমবার রাতে এসব হাঁস মারা যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারি ফরজ আলী জানান, খামারের সাড়ে চারশ হাঁস ডিম দিচ্ছিল। ইতোমধ্যে ৩১০টি মারা গেছে। অবশিষ্টগুলোর অবস্থাও ভালো না। সেগুলোও হয়তো ধুঁকে ধুঁকে মারা যাবে। আমি একেবারে পথে বসে গেলাম।
পল্লী চিকিৎসক শরীফুল ইসলাম জানান, আমি হাঁসগুলোকে ‘জেন্টামাইসিন সালফেট’ নামের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছিলাম। হয়তো হাঁসগুলো এই অ্যান্টিবায়োটিক সহ্য করতে না পেরে মারা গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুর আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সেখান থেকে মৃত হাঁস এনে ময়নাতদন্ত করেছি। হাঁসের শরীরে কোনো রোগ ছিল না। অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রার কারণে হয়তো হাঁসগুলো মারা গেছে। এছাড়া ইনজেকশন পুশ করায় মাংসে ছড়িয়ে পড়ার কারণে অসুস্থগুলোরও কোনো ওষুধ দিয়ে কাজ হচ্ছে না।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।