ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিদেশে পাঠানো ও চাকরি দেওয়ার নাম করে এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছেন এক দম্পতি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে মনিরুজ্জামান ও তার স্ত্রী সুকতারা বেগম গা ঢাকা দিয়েছেন।
গত
৪ জানুয়ারি গোদাগাড়ীতে এক সংবাদ সম্মেলন
করে প্রতিকার চেয়েছেন এলাকার প্রতারিত ৩৫ জন নারী
পুরুষ। তারা টাকা ফেরত
পেতে পথে পথে ঘুরছেন।
তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগও করছেন
না ওই দম্পতি। টাকা
ফেরত চাইলে মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের
অভিযোগে জানা গেছে, মনিরুজ্জামান
ও তার স্ত্রী বাসুদেবপুর
হাইকেয়ার মোড়ের বাজারে একটি দোকানঘর ভাড়া
নিয়ে তৈরি পোশাকের দোকান
দেন। সেই সুবাদে এলাকার
মানুষের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন।
মনিরুজ্জামান ও সুকতারা দম্পতি
উদ্যোক্তা তৈরি, বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির ব্যবস্থা করা, স্বল্প সুদে
ব্যাংক ঋণ পাইয়ে দেওয়া,
বিদেশে লোক পাঠানো ও
কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান,
কাঁথা সেলাই করে ঢাকার বাজারে
বিক্রি ও হাতের কাজ
শেখানোর কথা বলে এলাকাবাসীকে
আকৃষ্ট করেন।
প্রতারণার
কৌশল হিসেবে এলাকাবাসীর কাছ থেকে টাকা
জমা নেওয়া শুরু করেন। আবার
জমা টাকার ওপর কয়েকজনকে এক
দুই মাস কিছু কিছু
পরিমাণে লাভ দেন।
ভুক্তভোগী
শারমিন খাতুন অভিযোগে বলেন, মনিরুজ্জামান ও সুকতারা দম্পতি
এলাকার ৩৫ জনকে বিভিন্ন
এনজিও থেকে ঋণের ব্যবস্থা
করে দিয়ে ঋণের সমুদয়
টাকা নিজের কাছে রেখে দেন।
ভুক্তভোগীদের বলা হয় ঋণের
টাকা তার কাছে নিরাপদে
থাকবে এবং ঋণের কিস্তি
তারাই পরিশোধ করবেন। মাঝখান থেকে ঋণ গ্রহীতারা
মাসে মাসে ভাল অংকের
লাভ পাবেন। এছাড়া এলাকার আরও কয়েকজনকে বিদেশে
পাঠানোর কথা বলে মোটা
অংকের টাকা নেন। বিভিন্ন
সরকারি দপ্তরে চাকরির কথা বলে প্রায়
কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে
বাসুদেবপুর এলাকায় জমি কিনে একটি
পাকা বাড়ি তৈরি করেন।
ভুক্তভোগীরা
আরও বলেন, তারা এই দম্পতির
প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে টাকা
ফেরতের জন্য তাগাদা দিতে
থাকেন। কিন্তু নানা কৌশলে সে
বুঝিয়ে সময়ক্ষেপন করেন। এদিকে গত ৫ আগষ্ট
সরকার পতনের পরপরই একদিন রাতের আঁধারে উধাও হয়ে যান
মনিরুজ্জামান ও তার স্ত্রী
সুকতারা বেগম। এরপর থেকেই তাদের
ফোন বন্ধ হয়ে যায়।
ভুক্তভোগীরা
টাকা উদ্ধারের জন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈরে
গিয়ে তাদের সন্ধান পান। তবে টাকা
উদ্ধার করতে পারেননি কেউ।
উল্টো তাদেরকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকি দেওয়া হয়েছে। অবশেষে ভুক্তভোগীরা গোদাগাড়ী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের
পক্ষে শারমিন খাতুন বলেন, আমরা টাকা ফেরত
চাইতে গেলে আমাদেরকে হুমকি
দেওয়া হয়েছে। প্রতারক এই দম্পতি অনেক
মানুষকে সর্বস্বান্ত করে এলাকা থেকে
উধাও হয়েছেন। মোবাইল ফোন নম্বর বদলে
ফেলেছেন। ফলে তাদের সঙ্গে
কোন প্রকার যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
তারা প্রতারক দম্পতিকে গ্রেফতার করে আইনী প্রতিকারসহ
টাকা ফেরত চান।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে পাওয়া মনিরুজ্জামান ও তার স্ত্রী সুকতারা বেগমের মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরগুলি বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে এই বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।