ভণ্ড পীরের সঙ্গে নওমুসলিম সেজে প্রতারণা
যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:১০ এএম
আমতলীতে ১৬টি প্রতারণা মামলার আসামি ভণ্ড দরবেশ ফারুক হাওলাদার ও নও মুসলিম রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ক্লুবিহীন প্রতারণা মামলার আসামি ফারুক ও তার সহযোগীকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার সকালে আমতলী থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে কথিত ৬৫ গ্রাম স্বর্ণালংঙ্কার ও ১২ লাখ তের হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার দক্ষিণ ধামুরা গ্রামের কাদের হাওলাদারের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক হাওলাদার। তিনি এলাকায় দরবেশ হিসেবে পরিচিত। ভণ্ড দরবেশ সেজে ফারুক দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণা করে আসছেন।
গত ১০ বছর আগে তার সহযোগী হিসেবে বিপুল হাওলাদারকে সঙ্গে নেন। তাকে তিনি কথিত নও মুসলিম সাজিয়ে নাম পরিবর্তন করে রফিকুল ইসলাম নাম দেন। পরে ফারুক হাওলাদারের বাবার নামে তার বাবার নাম মিলিয়ে জাতীয় আইডি কার্ড করেন। এরপর তারা হিন্দু-মুসলমানদের নানা ভাবে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে আসছে।
গত ২৭ ডিসেম্বর আমতলী পৌর শহরের মিঠুন ঘোষের নিঃসন্তানী বোন স্কুল শিক্ষিকা শিউলী রানীকে সন্তান হওয়ার লোভ দেখিয়ে ২৪ ভরি স্বর্ণালংঙ্কার প্রতারণা করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মিঠুন ঘোষ বাদী হয়ে গত বুধবার আমতলী থানায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। আমতলী থানার এসআই আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক সাবেক ইউপি সদস্য মো. ফারুক হাওলাদারকে সনাক্ত করেন।
উজিরপুর পুলিশের সহায়তায় প্রতারক ফারুকের বাড়িতে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালায়। পরে তাকে ও তার নও মুসলিম ভাই রফিকুল ইসলামকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের দেওয়া তথ্য মতে তার বাড়ি থেকে ৬৫ গ্রাম কথিত স্বর্ণালংঙ্কার ও ১২ লাখ ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
দুপুরে পুলিশ তাদের আমতলী থানায় নিয়ে আসে। প্রতারক ফারুক হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৬টি প্রতারণা মামলা এবং রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য নও মুসলিম রফিকুল ইসলামের অপর নাম বিপুল হালদার। তার বাবার নাম প্রফুল্ল হালদার।
মামলার বাদী মিঠু ঘোষ বলেন, আমার নিঃসন্তানী বোন শিউলি রানীকে সন্তান লাভের আশা দেখিয়ে প্রতারক ফারুক ও বিপুল হালদার ২৪ ভরি স্বর্ণালংঙ্কার নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমতলী থানায় মামলা করেছি। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তার দুই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে।
আমতলী থানার এসআই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান বলেন, ক্লুবিহীন একটি প্রতারণা মামলায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক ফারুক হাওলাদার ও তার সহযোগী রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ফারুক এলাকায় দরবেশ হিসেবে পরিচিত। তিনি মানুষকে প্রতারণর ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংঙ্কার হাতিয়ে নেয়। সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক হাওলাদার দরবেশের বেশ ধরে প্রতারণা করে আসছে।
আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, প্রতারক ফারুক হাওলাদারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৬৫ গ্রাম কথিত স্বর্ণালংঙ্কার ও ১২ লাখ ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতারক ফারুক হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৬টি এবং কথিত নও মুসলিম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪টি প্রতারণা মামলা রয়েছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী) সার্কেল মো. রুহুল আমিন বলেন, সক্রিয় প্রতারণা চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতার করতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।