বাজারের সরকারি নলকূপ বসানো হলো জঙ্গলে
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০১ পিএম
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ‘সিংধা মোড়’ বাজারের জন্য বরাদ্দ সরকারি গভীর নলকূপ (সাবমার্সিবল) বসানো হয়েছে পাশের একটি জঙ্গলে। দুই বছর আগে সাবমার্সিবল গভীর নলকূপটি বসানো হলেও এখন পর্যন্ত এতে ট্যাংকি বসানো হয়নি।
স্থানীয় দুই-তিনজন ব্যক্তি নলকূপটির ট্যাংকি নিজেদের বাড়িতে নিয়ে রেখেছেন। ওই দুই ব্যক্তি মোটরের সুইচ নিজেদের দোকানে রেখে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো এটি ব্যবহার করেন। ফলে বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী নলকূপটির পানি ব্যবহার করতে পারছেন না।
কাগজেপত্রে নলকূপটি বাজারে বসানো হলেও বাস্তবে এর সুফল ভোগ করতে না পেরে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ট্যাংকি বসিয়ে নলকূপটির পানি ব্যবহার উপযোগী করার জন্য স্থানীয় মোফাজ্জল হায়দার নামে এক ব্যক্তি সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালে এডিবির অর্থায়নে সিংধা মোড় বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের সুবিধার্থে একটি নলকূপ বরাদ্দ দেওয়া হয়। তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মাঈনুল হক কাশেম এই গভীর নলকূপটি (সাবমার্সিবল) বাজারের ব্যবসায়ী ও বাজারে আসা লোকজনের পানি ব্যবহারের সুবিধার জন্য বরাদ্দ দেন। বরাদ্দ অনুযায়ী নলকূপ বসানোর পর এতে ট্যাংকি বসানোর কথা রয়েছে।
তবে নলকূপ বসানো হলেও ট্যাংকি উপজেলা চেয়ারম্যানের স্থানীয় দুই-তিনজন অনুসারী ট্যাংকি তাদের বাড়িতে নিয়ে রাখেন। নলকূপের পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণও থাকে তাদের দুইজনের নিয়ন্ত্রণে। এতে বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী এই নলকূপের পানি ব্যবহার করতে পারছেন না। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় মোফাজ্জল নামে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে সিংধা গ্রামের অভিযোগকারী মোফাজ্জল মিয়া বলেন, দুই বছরের বেশি সময় আগে বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর পানির সমস্যা সমাধানের জন্য এই নলকূপটি বসানো হয়েছিল। তবে বাজারের নলকূপ বসানো হয়েছে পাশের একটি জঙ্গলে। সেখানে ব্যবসায়ী বা সাধারণ মানুষ যেতে পারেন না। এর ট্যাংকি গ্রামের দুই-তিনজন বাড়িতে নিয়ে রেখে দেয়। ফলে আজ পর্যন্ত কোনো মানুষ এই নলকূপের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। মোটরের সুইচ নিজেদের দোকানে লাগিয়ে ওই দুজনই নিজেদের মতো এটির পানি ব্যবহার করে। ফলে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী এর সুফল পাচ্ছেন না।
গ্রামের মো. সুমন মিয়া বলেন, নলকূপটি বাজারের মধ্যে উন্মুক্ত কোনো জায়গায় বসানোর কথা ছিল; কিন্তু জোর করে এটি আমার দলিলের জায়গায় জঙ্গলের মধ্যে বসানো হয়েছে। এতে সাবমার্সিবল মোটর লাগানো হলেও দুই বছরেও বসানো হয়নি ট্যাংকি। মোটরের সুইচ দুই-তিনজনের কাছে তাকে তারা শুধু ব্যবহার করে তাদের ইচ্ছে মতো। আর কারো কোনো সুবিধা হয় না।
বাজারের ব্যবসায়ী মো. সবুজ মিয়া দ্রুত ট্যাংকি বসিয়ে এটিকে জনগণের ব্যবহার উপযোগী করার দাবি করেন।
এ নলকূপ বরাদ্দের তথ্য জানাতে রাজি হননি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী অমিত চন্দ্র দে। তিনি বলেন, অনেক আগের কথা মনে নেই। এই নলকূপটি তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মাইনুল হক কাশেম এডিবির অর্থায়নে দিয়েছেন। জায়গা নির্বাচন এলাকার লোকজনের সঙ্গে মিলেই করেছেন।
বিষয়টি অবহিত করলে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খবিরুল আহসান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।