শীতে কাবু গাইবান্ধার ৩১ চরাঞ্চলের মানুষ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
শীতে কাবু গাইবান্ধার সাত উপজেলার নদীবেষ্টিত সাঘাটা, ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার অন্তত দেড় লাখ মানুষ। কয়েক দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। রোদ না ওঠায় শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠাণ্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে গাইবান্ধার তিস্তা যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর ১৬৫টি চরাঞ্চলের মানুষ। শহরের জীবনযাপন ও খেটেখাওয়া মানুষ কাজকর্ম করতে পারছে না। দিনমজুর, ধান কাটা-মাড়াইয়ে নিয়োজিত কামলা ও বীজতলা বপনের কাজ প্রচণ্ডভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শ্রমিকরা শীতের তীব্রতার কারণে কৃষিকাজ করতে পারছে না। গ্রামের বাড়ি বাড়ি রাত-দিন ঘর থেকে বের হতে পারছেন না দরিদ্র শীতার্ত মানুষ।
বিশেষ করে গাইবান্ধার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর চরাঞ্চল হরিপুর, বেলকা, কাপাসিয়া, শ্রীপুর, লালচামার, উজান বুড়াইল, ভাটি বুড়াইল, পোড়ার চর, বাদামের চর, ছেড়িমারার চর, কামারজানি, রসুলপুর, হাসধরা, চিথুলিয়ার দিগর, মোল্লার চর, কড়াইবাড়ি, মাইজবাড়ি, কঞ্চিপাড়া, চর কৃষ্ণমনি, চর গুপ্তমনি, সন্নাসির চর, উড়িয়া, রতনপুর, সিংগিজানিসহ অন্তত ৩১টি চরের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ শীতের তীব্রতার কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না।
এসব চরাঞ্চলের মানুষ জোট বেঁধে বা নিজের বাড়িতে দিন-রাত খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
মোল্লারচরের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান জানান, তার ইউনিয়নজুড়ে অভাবী ও নদী ভাঙা মানুষের বসবাস। তারা সবাই অন্যের জমিতে কামলা দেয়; কিন্তু শীতের তীব্রতায় এসব লোকজন এখন ঘরবন্দি জীবনযাপন করছেন।
কড়াইবাড়ির চরের বাসিন্দা হায়দার আলী বলেন, বাবা শীতের কারণে ঘরেও থাকা যায় না। ঘন কুয়াশা শুরু হলে টপটপ করে গায়ে পানি পড়ে। তাই তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে খড়ের বিছানায় শুয়ে বসে রাত কাটাতে হয়। সন্ধ্যা ও সকালে শীতের তীব্রতা থেকে রেহাই পেতে বাড়ির মধ্যে খড়কুটো জালিয়ে আগুনের তাপ নেই।
কয়েক দিন ধরে ঘরবন্দি হাসেন আলী বলেন, মানুষের এত টাকা। দানশীল মানুষ এসে দেখুক আমরা ক্যামন অবস্থায় রাত-দিন কাটাই। ভোটের সময় এলে অনেক আশ্বাস দেন কিন্তু তারা কথা দিয়ে কথা রাখে না। কম্বল এলে তারা তাদের নিজের স্বজনদের বাড়িতে রাতারাতি পৌঁছে দেয়। আর গরিব মানুষ ঠাণ্ডায় কাহিল হয়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের তাপের অপেক্ষায় থাকে।