Logo
Logo
×

সারাদেশ

দুর্নীতির বরপুত্র প্রকৌশলী কাবুল, স্ত্রীর নামে পাইপের লাইসেন্স

Icon

মো. নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ পিএম

দুর্নীতির বরপুত্র প্রকৌশলী কাবুল, স্ত্রীর নামে পাইপের লাইসেন্স

ঘুস দুর্নীতি আর অনিয়মের মাধ্যমে কোটিপতি বনে গেছেন সহকারী প্রকৌশলী কাবুল খান। নিজ দপ্তরে স্ত্রীর নামে রয়েছে পাইপ সরবরাহের লাইসেন্স। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে নিজ দপ্তরে স্ত্রীর লাইসেন্স ব্যবহার করে বিভিন্ন কোম্পানির পাইপ সরবরাহ করতেন তিনি।

অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি এখন বিত্তশালী কাবুল খানে পরিণত হয়েছেন। রয়েছে মানিকগঞ্জ শহরে দামি ফ্ল্যাট, ৪ শতাংশ জমি, গ্রামের বাড়িতে করেছেন অত্যাধুনিক মডেলের তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি। নিজের চলাচলের জন্য রয়েছে একটি গাড়ি। বর্তমানে তিনি সাভার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কার্যালয়ে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।

জানা গেছে, ২০২১ সাল থেকে ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত কাবুল খান মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ে সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। নিজের জেলায় চাকরি করার সুবাদে তিনি খাইস অ্যান্ড কাশফিয়া এন্টারপ্রাইজ নামক একটি পাইপ সরবরাহের লাইসেন্স বানান। ওই লাইসেন্সের প্রোপাইটর তার স্ত্রী ফারজানা উর্মি।

এরপর স্ত্রীর লাইসেন্স ব্যবহার করে নিজ দপ্তরে আরএফএল, নিরা এবং গাজী কোম্পানির পাইপ সরবরাহ শুরু করেন কাবুল খান। ঠিকাদারদের বাধ্য করা হতো তার কাছ থেকে পাইপ নেওয়ার জন্য। এক দিকে ঘুস অপরদিকে পাইপ সরবরাহ করতেন তিনি। গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট বাহিনী। হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। মানিকগঞ্জের প্রভাবশালী এক সাংবাদিকের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিত্তশালী বনে গেছেন তিনি। তার বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা মিতরা ইউনিয়নের বাড়াইভিকরা গ্রামে।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সহকারী প্রকৌশলী কাবুল খান গ্রামের বাড়ি বাড়াই ভিকরা এলাকায় একটি অত্যাধুনিক মডেলের তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ওই বাড়ির কাজ সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া মানিকগঞ্জ শহরের আভিজাত্য খালপাড় এলাকায় রাবেয়া জান্নাত টাওয়ারের তিনতলা একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এবং শহরের স্টেডিয়ামের পাশে রয়েছে ৪ শতাংশ জমি। কাবুল খান একটি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করেন। গাড়িটির আনুমানিক দাম ১০ লাখ টাকা।

সহকারী প্রকৌশলী কাবুল খান বলেন, আমার ২টি নিরা এবং আরএফএল কোম্পানির কাছ থেকে ডিলারশিপ নিয়ে রেখেছি। কোম্পানির লোকজনই পাইপ সরবরাহ করেন। আমার স্ত্রীর একটা কোড নাম্বার আছে। ওই কোডে কোম্পানির লোকজন পাইপ সরবরাহ করেন।

আপনি সরকারি চাকরি করেন আর আপনার স্ত্রী আপনার দপ্তরে পাইপ সরবরাহ করে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি তো অস্বীকার করিনি ভাই? আমি সরকারি চাকরি করি হয়তো আমি করতে পারব না। তবে আমার স্ত্রীর করতে সমস্যা নেই। আমার পরিবারের যে কোনো লোকই করতে পারে। চাইলে আপনিও করতে পারেন।

তার কাছে বাড়ি, ফ্ল্যাট আর জায়গার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি আরও বলেন, মানিকগঞ্জের ফ্ল্যাট আমার নামে কেনা হয়েছে। আর গ্রামের বাড়ি আমার ভাইদের সঙ্গে যৌথভাবে করেছি। আর শহরের ৪ শতাংশ জমি তার স্ত্রী ফারজানা উর্মি বাবার ওয়ারিশের টাকা দিয়ে তার নামে কিনেছে বলে তিনি জানান। তবে তিনি সংবাদ না করতে স্থানীয় এক সাংবাদিককে দিয়ে এই প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন।

ঢাকা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বশির আহাম্মেদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে তার স্ত্রী নিজ দপ্তরে পাইপ সরবরাহ করতে পারে না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম