দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সেই প্রধান শিক্ষক রুবীকে পুনর্বহাল চেষ্টা
গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম
গাজীপুর মহানগরীর ৪১ নং ওয়ার্ডের পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের অনিয়ম দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সেই প্রধান শিক্ষক রুবী বেগমকে জোরপূর্বক পুনর্বহালের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার সকাল ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বিতাড়িত রুবী বেগমকে পুনর্বহালের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বলছেন, রুবী বেগম এর আগে ৩ মাসের ছুটি কাটিয়ে আবারও ৬ মাসের ছুটিতে আছেন। এই মূহুর্তে কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতি নতুন বছরে শিক্ষার্থী ভর্তি কাজ ব্যাহত হবে।
স্থানীয়দের খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয় বিএনপি-আওয়ামী লীগের একটা অংশ পার্শ্ববর্তী বাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি জামানের স্ত্রী রুবীকে শনিবার বিকালে পূর্ব ঘোষণা দিয়ে রোববার সকালে জোরপূর্বক পুনর্বহাল করতে চেষ্টা করে। খবর পেয়ে ছাত্রজনতা, অভিভাবক ও জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে এই চেষ্টা প্রতিহত করে দেয়। স্কুলে প্রবেশ করতে না পেরে রুবী পূবাইল থানার ভেতরে অবস্থান নিলে পুলিশের দুটি গাড়ি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিতাড়িত পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুবী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমি বিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে পুনর্বহালের আবেদন করলে পুনর্বহাল করে দেবে বলেছে উর্ধ্বতন কর্মকতারা। তাই বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেছি।
প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা উনার ব্যক্তিগত রোষানলে পড়ে খেলাধুলাসহ অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
পূবাইল থানা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শামীম মৃধা জানান, ফ্যাসিবাদের দোসর অযোগ্য অনিয়ম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত রুবীকে ইতোমধ্যে ছাত্র-জনতা বিদ্যালয় থেকে অপসারণ করেছে। তার বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। বিতর্কিত রুবীকে পুনর্বাসন পুনর্বহাল মেনে নেওয়া হবে না।
৪১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার দেওয়ান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা জোরপূর্বক কাউকে স্কুলে পুনর্বহাল করতে আসেনি। আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে যা হবার হবে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেভিনিউ সোহেল রানা জানান, ৩ মাসের অধিক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত তা আমাকে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া উনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূবাইল থানার ওসি শেখ আমিরুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত। প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আইনানুযায়ী ঢুকতে হবে আবার বহিষ্কার করতে চাইলেও আইনের মাধ্যমেই হতে হবে। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা সচেষ্ট আছি।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন যুগান্তরকে বলেন, আমি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা) বলে দিচ্ছি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।