জয়পুরহাটে শুভ বড়দিন উপলক্ষে বুধবার সার্বজনীন কেন্দ্রীয় শিব মন্দির মার্কেটে সর্বসাধারণের জন্য চালুকৃত- ‘একটু সুখের বাজার’ এ ছিল ১০০ টাকায় ব্যাগভর্তি সবজির বিশেষ কম্বো অফার। শুরুতে এ বাজারটিতে কেবলমাত্র স্বল্প ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য বাজার মূল্যের অর্ধেকেরও কম মূল্যে (ভর্তুকি দিয়ে) বিভিন্ন সবজি বিক্রি করা শুরু হলেও প্রয়োজন ও চাহিদা বিবেচনায় পরবর্তীতে সর্বসাধারণের (সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের) জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে সবজি বিক্রি। ফলে অর্ধেকেরও কম মূল্যে প্রয়োজনীয় শাকসবজি কিনতে পেরে অনেক খুশি ক্রেতারা।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে প্রায় দিশেহারা হয়ে পড়া নিম্ন ও মধ্যবিত্ত স্বল্পআয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে গত ২৭ অক্টোবর থেকে জয়পুরহাটের জেলা সার্বজনীন কেন্দ্রীয় শিব মন্দির কমিটির ব্যানারে মন্দির চত্বরে কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজ কুমার খেতান ওরফে রাজু ‘একটু সুখের বাজার’ নামে ভর্তুকি মূল্যের এ সবজি বাজার চালু করেন।

ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় ও বিক্রির সুবিধার্থে বর্তমানে এ সবজি বাজারটি মন্দির চত্বর থেকে সরিয়ে পাশের মন্দির মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়েছে। এমন কম মূল্যে সর্বসাধারণের জন্য জেলার প্রতিটি উপজেলায় বিভিন্ন সবজি কিংবা শুধু আলু বিক্রির সরকারি ও বেসরকারিভাবে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও সে সে সব সবজি বাজার বা সবজি কর্নার ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেলেও জয়পুরহাট জেলা শহরের জেলা সার্বজনীন কেন্দ্রীয় শিব মন্দির কমিটির এ সবজি বাজারটি চালু রয়েছে এখনো; যা ক্রেতা সাধারণের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

কারণ এ সবজি বাজারে প্রতিদিন নতুন আলু, পটোল, বেগুন, করলা, টমেটো, সিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, কাঁচামরিচ, কাঁচকলা, মিষ্টি লাউ, ছাঁচি লাউ,ধনেপাতা, লাল শাক, পালং শাক, মুলা শাক ইত্যাদি শাকসবজি (ক্রেতাদের চাহিদা বিবেচনা করে) বাজারের অর্ধেক মূল্যে বিক্রি করা হয়। তবে এর মাঝে সপ্তাহে অন্তত দুবার কোনো না কোনো উপলক্ষে দেওয়া হয় বিশেষ অফার।

এর আগে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে দেওয়া হয়েছিল- ১০০ টাকায় ব্যাগভর্তি ১৪ রকমের সবজি ও ৪ রকমের শাকের ছিল বিশেষ কম্বো অফার। একইভাবে বুধবার শুভ বড়দিন উপলক্ষে দেওয়া হয়- ১০০ টাকায় প্রয়োজনীয় ৬ রকমের সবজির ব্যাগ ভর্তি বিশেষ কম্বো অফার।

এ অফারে ছিল- নতুন আলু ৫০০ গ্রাম, বেগুন ১ কেজি, মুলা ১ কেজি, শিম ৫০০ গ্রাম, নতুন পেঁয়াজ ৫০০ গ্রাম ও একটি ফুলকপি। একটু সুখের বাজার থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ শতাধিক ক্রেতারা তাদের প্রয়োজনীয় সবজি কিনতে আসেন।

তবে বিশেষ অফার দেওয়া হলে তখন ক্রেতাদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়, দেখা যায় নারী-পুরুষের উপচেপড়া ভিড়, দীর্ঘ (লম্বা) লাইন। শুরুতে প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি ক্রেতা সমাগত হতো এই সবজির বাজারে। কিন্তু ইদানীং বাজারে সবজির দাম কিছুটা নিম্নমুখী হওয়ায় এখানকার ক্রেতার সংখ্যার কিছুটা কমেছে এটাকে এ বাজার কমিটি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।

জয়পুরহাট জেলা সার্বজনীন কেন্দ্রীয় শিব মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজ কুমার খেতান জানান, যতদিন বাজার পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে না এসেছে, ততদিন আমদের এ ভর্তুকি মূল্যের একটু সুখের বাজারে সবজি বিক্রি কার্যক্রম চলমান থাকবে। আগামী রমজান মাস পর্যন্ত এ বাজার চালু থাকবে।