আদালতের আদেশ অমান্য করে জমির ধান কর্তন
অভিযোগ দিতে থানায় যাওয়ার পথে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম
যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পিএম
বরগুনার আমতলীতে আদালতের আদেশ অমান্য করে সোহাগ তালুকদার ও তার সহযোগীরা ধান কেটে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলার বাদী সেলিম থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার পথে আসামিরা তাকে তুলে নিয়ে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে।
সোমবার বিকালে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মামলার বাদী মো. সেলিম। প্রভাবশালী সন্ত্রাসীদের ভয়ে তিনি ও তার পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসনের কাছে এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সেলিম বলেন, আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ঘোপখালী মৌজায় আমার ৯.২০ একর জমি সোহাগ তালুকদার, এরশাদ তালুকদার, তোফাজ্জেল তালুকদার, জাহাঙ্গীর তালুকদার, বাবুল হোসেন, বাছির তালুকদার ও ইউসুফ আকন জোরপূর্বক ভোগদখল করে আসছে। আমি এ বিরোধীয় জমির বিরুদ্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছি। আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আশরাফুল আলম মামলাটি আমলে নিয়ে ওই জমির ওপর বিবাদীদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু বিবাদীগত আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ১৭ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) ওই বিরোধীয় জমির ধান কেটে নিয়ে যায়। আমি হতদরিদ্র মানুষ, ধান কাটায় বাঁধা দিতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর আমি আমতলী থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার পথে আমাকে বিবাদীরা ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী আব্দুল লতিফ গাজী, সুলতান আহমেদ, সেরাজ উদ্দিন গাজী ও আলতাফ মীর আমাকে তুলে নেয়। পরে তারা লোহার রড় দিয়ে পিটিয়ে আমার কোমরে গুরুতর জখম করে আমাকে ফেলে রেখে চলে যায়। এ বিষয়ে থানায় মামলা করলে আমাকে খুন এবং আমার পরিবারের নারী সদস্যদের ধর্ষণ ও এসিড মেরে ঝলসে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। পরে আমাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে আমি বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
বাদী সেলিম বলেন, সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি পরিবারসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছি। বাড়িতে যেতে পারছি না। থানায় অভিযোগ দেওয়ারও সাহস পাচ্ছি না।
এ সময় পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তার পরিবারের সদস্য কহিনুর বেগম, মরিয়ম বেগম ও সীমা আক্তার।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরুজ্জামান খাঁন বলেন, আহত সেলিমকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সোহাগ তালুকদার মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমাদের জমির ধান আমরা কেটে নিয়েছি।
আমতলী থানার এএসআই হারাধন চন্দ্র বাইন বলেন, আদালতের আদেশ মতে উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় নোটিশ দিয়েছি; কিন্তু বিবাদী পক্ষ আদালতের আদেশ অমান্য করে জমির ধান কেটে নিয়েছেন।
আমতলী থানার ওসি আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।