বাঘায় ২৫ কোটি টাকার খেজুরগুড় বিক্রির সম্ভাবনা
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ পিএম
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় চলতি মৌসুমে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে খেজুর গুড় উৎপাদনের ব্যস্ততা। উত্তরাঞ্চলের এই উপজেলার খেজুর গুড়ের খ্যাতি দেশজুড়ে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এই মৌসুমে খেজুর গুড় থেকে সরকারিভাবে ২৫ কোটি টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলায় দু’টি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে ৩০ হাজার ৩৮৯ জন কৃষি পরিবার রয়েছে। খেজুর বাগান রয়েছে চার হাজার। এছাড়া সড়কপথ, পতিত জমি ও বাড়ির আঙিনা মিলে দেড় লক্ষাধিক খেজুরগাছ রয়েছে। একজন গাছি প্রতিদিন ৫০ থেকে ৫৫টি খেজুর গাছের রস আহরণ করতে পারেন। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চার হাজার গাছি রস সংগ্রহে ব্যস্ত রয়েছে। প্রতি মৌসুমে তারা খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল হয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একজন কৃষক তাদের গাছের সংখ্যা অনুপাতে গাছি নিয়োগ করেন। তারা মৌসুম জুড়ে রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত থাকেন। উপজেলায় গুড়ের প্রধান হাট বাঘা ও আড়ানী হাট। এরপর রয়েছে মনিগ্রাম ও দিঘাসহ অন্যান্য হাট। সপ্তাহে রোববার ও বৃহস্পতিবার বাঘারহাট বসে। এ হাটেই সবচেয়ে বেশি গুড় বেচাকেনা হয়।
উপজেলার বাঘা ও আড়ানী পৌরসভা ছাড়াও বাজুবাঘা, গড়গড়ি, পাকুড়িয়া, মনিগ্রাম, আড়ানী, বাউসা ও চকরাজাপুর ইউনিয়নের অন্যান্য হাটেও যথেষ্ট পরিমান গুড় বেচাকেনা হয়। তবে বেশি দাম পাওয়ার আশায় অনেকেই বাঘারহাটে গুড় বিক্রি করতে আসেন। বাঘারহাটে রোববার প্রতি কেজি খেজুর গুড় ১৩০-১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। মৌসুমের একেবারে শুরুতে এ গুড়ের দাম প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। প্রতি বছরই মৌসুমের শুরুতে বেশি দামে গুড় বিক্রি হলেও ভরা মৌসুমে দাম কিছুটা কমে যায়।
বাঘা বাজারের ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার এনামুল হক বলেন, চলতি শীত মৌসুমে প্রায় ৪৫-৫০ কোটি টাকার গুড় বেচা কেনা হবে। ফলে উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে ব্যবাসায়ীরা হাজার হাজার টাকা আয় করবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরকারি হিসাবে চলতি মৌসুমে মানুষ খেজুর গুড় থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা আয় করবেন। উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে খেজুর গাছ রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বাণিজ্যিকভাবে খেজুর গুড় উৎপাদনে সহায়তা দেওয়া হলে এই গুড়কে আরো লাভজনক করা সম্ভব। ফলে বিদেশেও গুড় রফতানি করা যেতে পারে। বিদেশে রপ্তানি করা হলে এই গুড় থেকে সরকার বিপুল রাজস্ব পাবেন।