ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তিন বছর পর সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছে মদন থানা পুলিশ। রোববার উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বাড়রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিছনে শপিং ব্যাগ থেকে চেয়ারম্যান-মেম্বারের ২৬৫টি ব্যালট পাওয়া গেছে।

জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাফায়েত উল্লাহ রয়েল নির্বাচিত হন। নির্বাচনের দিন বাড়রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাফায়েত উল্লাহ রয়েলের লোকজন নৌকা প্রতীকে জোরপূর্বক ভোট দেয়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কয়েকজন আহতও হয়। ফল প্রকাশের তিন বছর পর সাফায়েত উল্লাহ রয়েল  নৌকা প্রার্থীর সিল মারা ২০০ ব্যালট ও ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়ার ৬৫ সিল মারা ব্যালট পেপার পান পথচারী হিরন মিয়া।  

সুতিয়ারপাড় গ্রামের হীরন মিয়া জানান, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বাড়রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে একটি শপিং ব্যাগ দেখতে পান। ব্যাগটি হাতে নিয়ে দেখতে পান ২টি সাদা চেয়ারম্যান পদের ব্যালটে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম রয়েছে, তারা হলেন- মো. খায়রুল ইসলাম, আবু তাহের আজাদ, সাফায়েত উল্লাহ রয়েলের। সাফায়েত উল্লাহ রয়েলের নৌকা প্রতীকে ২০০, ইউপি সদস্য পদে ৬৫টি ব্যালট পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, গত নির্বাচনে এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক নৌকায় ভোট নিয়ে যায়। যার প্রমাণ আজ আপনারা নিজের চোখে দেখে যান।

ইউপি সদস্য পদে (পরাজিত) বাচ্চু মিয়া জানান, বিদ্যালয়ের পিয়ন আমাকে ডেকে বলেন, চাচা আপনার প্রতীক ফুটবল মার্কায় সিল মারা ব্যালট বিদ্যালয়ের পিছনে পাওয়া গেছে। তারপর আমি ব্যালট নিয়ে অনেক অফিসে গিয়েছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, ৩ বছর পূর্বের ঘটনা আমার মনে নেই, আমার কেন্দ্রে এমন কোনো অভিযোগ ছিল না।

মদন উপজেলার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা হামিদ ইকবাল বলেন, যথারীতি নিয়ম অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিকট ব্যালট পেপার হিসাব করে পাঠিয়ে দিয়েছি। আপনারা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বক্তব্য নেন।

মদন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি শুনেছি একটি বিদ্যালয়ের পেছন থেকে ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়েছে। তা পুলিশের কাছেই আছে।

মদন থানার ওসি নাইম মো. নাহিদ হাসান জানান, আমরা ঘটনাস্থল থেকে সিল মারা ব্যালট উদ্ধার করে নির্বাচন অফিসে প্রেরণ করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইমদাদুল হক জানান, মদন থানা ওসিকে আমি ব্যালট পেপার উদ্ধার করে নির্বাচন অফিসে নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।