হাতিয়ায় মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে পেটালেন বিএনপি নেতা

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ পিএম

নোয়াখালীর হাতিয়ায় রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এএইচএম জিয়াউল ইসলামের ওপর হামলা করেন পৌরসভা বিএনপির সভাপতি কাজী আবদুর রহিম।
রোববার সকালে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় হামলার শিকার অধ্যক্ষ হাতিয়া থানা ও নৌ কন্টিনজেন্ট কমান্ডারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধ্যক্ষ জিয়াউল হক হাসেম ৩ মাস মেডিকেল ছুটিতে থাকার পর রোববার সকালে মাদ্রাসায় আসেন। তাকে দেখে তিনতলায় ওঠার প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন কাজী আবদুর রহিম। অধ্যক্ষ নিচে নেমে যাওয়ার সময় রহিম দৌড়ে গিয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং লাথি ও কিল-ঘুসি মারেন। এ সময় অন্য শিক্ষকরা তার ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।
জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর থেকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কাজী রহিমসহ কুচক্রী একটি মহল বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। অধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়ে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্নভাবে উসকানি দেয়। মাদ্রাসার কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে মিছিল করায় কাজী রহিম।
এদিকে অধ্যক্ষ জিয়াউল হক হাসেম পদত্যাগ করলে কাজী আবদুর রহিম অধ্যক্ষ হবেন- এ আশায় তিনি এসব করছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, কাজী রহিম বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে লিপ্ত হওয়ায় তাকে ইতোমধ্যে বহিষ্কার করা হয়। তবুও তার অনিয়ম কমেনি বরং আরও বহুগুণে বেড়েছে।
৫ আগস্টের পর তার প্রভাব বিস্তারের ফলে অতিষ্ঠ হাতিয়া পৌরসভার মানুষ। সাবেক এমপি প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের নাম ভাঙিয়ে সব অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন কাজী রহিম।
যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন কাজী আবদুর রহিম। তিনি বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক বরাবর। তিনি ওই তদন্ত ঠেকাতে মিথ্যাচার করছেন। তার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা রয়েছে বলে তিনি জানান।
হাতিয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এএইচএম জিয়াউল ইসলাম বলেন, একটা প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে নানা প্রয়োজনে এমপি-মন্ত্রীদের শরণাপন্ন হতে হয়। প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে আমাকেও বিভিন্ন সময় এমপি মোহাম্মদ আলীর দ্বারস্থ হতে হয়েছে। আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত নই। তিনি তার ওপর হামলার বিচার দাবি করেছেন।
হাতিয়া থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, শনিবার রাতে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।