আগের মতো দেখতে চাই: গুলিবিদ্ধ তোফাজ্জল
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার তোফাজ্জল (২৫) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে চোখ হারাতে বসেছেন। তিনি বাম চোখে একেবারেই দেখতে পাচ্ছেন না। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না তার পরিবার।
গুলিবিদ্ধ তোফাজ্জল উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের বলাইশিমুল গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে। বিনা চিকিৎসায় তার বাঁ চোখ ভালো না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, তোফাজ্জল চট্টগ্রামে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। গত ৫ আগস্ট দুপুরের দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ইপিজেড সংলগ্ন জুলাই-আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। একপর্যায়ে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট তোফাজ্জলের চোখে লাগে। সঙ্গেই সঙ্গেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
অন্যদের সহায়তায় তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ঢাকা ইস্পাহানি চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার চোখে রেটিনা অপারেশন করতে হবে।
গুলিবিদ্ধ তোফাজ্জল বলেন, আন্দোলন শুরু হলে আমি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কর্ণফুলী ইপিজেড সংলগ্ন স্থানে পৌঁছলে পুলিশের রাবার বুলেট আমার বাম চোখে এসে লাগে। এ সময় স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
তোফাজ্জলের বড় ভাই মোজাম্মেল হক বলেন, আমি ঢাকায় কাজ করে সংসার চালাই। আমরা তিন ভাই। তোফাজ্জল সবার ছোট। আমার বাবা নেই। আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ তোফাজ্জলের চোখের চিকিৎসার জন্য এ পর্যন্ত প্রায় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আমার ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তশালীদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দুয়া উপজেলা সমন্বয়ক দিলশাদ প্লাবন বলেন, আমরা আহতদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিচ্ছি। অসুস্থদের যাতে সঠিক চিকিৎসা হয় সেই ব্যবস্থা আমরা করছি। সবার সহযোগিতা চাই।
কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার জানান, শুনেছি ৫ আগস্ট কর্ণফুলী ইপিজেডসংলগ্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে তোফাজ্জল বাম চোখে গুলিবিদ্ধ হন। বর্তমানে তার পরিবার খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তোফাজ্জল ছাড়াও উপজেলায় আরও অনেক লোক আহত হয়েছেন। আমরা আহতের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। আহতরা যাতে সহযোগিতা পান তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।