Logo
Logo
×

সারাদেশ

‘ভূমি অফিসকে জানিয়ে সরকারি জমিতে দোকান করেছি, নিউজ কইরেন না’

Icon

ভেদরগঞ্জ, শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৭ পিএম

‘ভূমি অফিসকে জানিয়ে সরকারি জমিতে দোকান করেছি, নিউজ কইরেন না’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে চলা ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে গত ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে পতন হয় দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা আওয়ামী লীগের দুঃশাসন।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের গত চার মাসে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় কয়েক কোটি টাকার সরকারি জমি ও অবৈধভাবে খাল দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে সরকারি জায়গা দখল করছেন বলে জানান স্থানীয়রা।

কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। অপরদিকে অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার সদর, সখিপুর বাজার ও এর আশপাশের এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে দুই শতাধিকেরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া সাজানপুর বাজারের খালে ৪০টি, আরশিনগর ইউনিয়নের চরফিলিজ বাজারে খাসজমিতে ৩টি দোকান নির্মাণ করেছেন জাকির বেপারী।

নান্টু মালত বাজারের চারপাশে ৭০টি, ভেদরগঞ্জ হাসপাতাল রোডে ১০টি, দক্ষিণ তারাবুনিয়া মাল বাজারে ১০টি, চরকুমারিয়া খাসমহল বাজারে ৮টি, চরভিলিজ বাজারে ৫টি, বালারবাজার ও নরসিংহপুর ফেরিঘাটে ২০টি, নারায়ণপুর ও ইকরকান্দিতে ১০টি অবৈধ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

অপরদিকে জয়ন্তী নদীসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল দখল করে প্রভাবশালী মহল বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। সরকার পতনের আগে একটি মহল খাল দখল করত, এখন আরেকটি মহল দখলে মেতে উঠেছে। এমন অস্থায় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে জানান স্থানীয়রা।

খিপুরের বাসিন্দা শাহীন আহমেদ বলেন, গত ১৫ বছর একটি মহল যে পরিমাণ সরকারি খাল দখল করে প্রতিষ্ঠান করেছে, এখন আগেরও চেয়েও বেশি দখল করছে আরেকটি মহল। আমাদের সখিপুর বাজারের খালটি মৃত প্রায়, পানি নিষ্কাশন বন্ধ। প্রশাসন কোনো ভূমিকাই নিচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে সরকার অনেক টাকা রাজস্ব হারাবে।

চরফিলিস বাজারের জাকির বেপারী বলেন, ‘সরকারি জায়গায় দোকান করতেছি। ভূমি অফিসকে জানিয়েই করতেছি। আপনারা নিউজ কইরেন না। আমি পরে আপনাদের সঙ্গে দেখা করব।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিন্দ্য মন্ডল বলেন, অবৈধভাবে যারা খাসজমি দখল করেছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। অবৈধভাবে দখল করা স্থাপনাও খুব শিগগিরই উচ্ছেদ করা হবে। সরকারি খাল কখনই দখল করা যাবে না। আমি নতুন এসেছি, এখানে ডিসি স্যারের নির্দেশে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ভেদরগঞ্জেও শুরু করব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম