আলেমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার নেপথ্যে...
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫ পিএম
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় পারিবারিক ও জায়গা সংক্রান্ত বিরোধে মাওলানা আশরাফ মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। আলেমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করায় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এলাকার ১০০ জন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে লিখিত হলফনামা দিয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে সরকার পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ নেতাদের প্ররোচনায় এ মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।
অনুসন্ধান বলছে, ধর্ষণ মামলার বাদী এলাকায় পরকীয়া, অসামাজিক ও অশালীন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিগত দিনেও তার বিরুদ্ধে এ রকম অনেক অভিযোগ রয়েছে। বাদীর পরকীয়া নিয়ে এলাকায় অনেক সালিশ হয়েছে। ২ বছর পূর্বে বাদী নির্মাণ শ্রমিকের (রাজমিস্ত্রি) সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁওয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সালিশের মাধ্যমে এটার সমাধান হয়ে ফের পূর্বের স্বামীর সঙ্গে সংসার করছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ৩০ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাওলানা আশরাফ মিয়া তার ঘরে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তিনি ৪ আগস্ট মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেন।
এলাকার বাসিন্দা আব্দুল বাছিত উস্তার, জামিল আহমদ বলেন, উনার বিরুদ্ধে এলাকায় কোনো অভিযোগ নেই। তিনি সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত। তিনি ব্যবসা ও পরিবার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন। লোভী নারী আওয়ামী লীগ নেতাদের পরামর্শে সরকার পতনের আগের দিন এ মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযোগকারীর অভিযোগে দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে তার স্বামী রিসিভ করে বলেন, আমি মৌলভীবাজার শহর থেকে বাড়িতে যাচ্ছি। ১০ মিনিট পরে বাড়িতে গিয়ে আপনাকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দিচ্ছি। প্রতিবেদক ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ৪টা ১৩ মিনিটে ফের ফোন করলে ওই নারী বলেন, তিনি ইসলামপুর তার বোনের বাড়িতে চলে গেছেন।
ধর্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদকের সঙ্গে অশালীন কথা বলেন। শালীনতার মধ্যে কোনো উত্তর দেননি।
কুলাউড়ার টিলাগাঁওয়ের নির্মাণ শ্রমিকের সঙ্গে আপনার স্ত্রী পরকীয়া করে পালিয়ে গিয়েছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রতিবেদককে গালিগালাজ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
বাদীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক রাজনগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা হয়েছে।
তবে রাজনগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মধুছন্দা দাশ বলছেন, কারো ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত তিনি করেননি।
ইউপি সদস্য শেখ রফিক রিপন বলেন, মাওলানা আশরাফ মিয়ার অতীতের এরকম কোনো রেকর্ড নেই। উনাকে একজন ভালো আলেম হিসেবে জানি। অভিযোগকারী বিগত ২-৩ বছর আগে তাদের ঘরের নির্মাণ শ্রমিকের (রাজমিস্ত্রি) সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পালিয়ে যায়। কয়েক দিন পরে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিশ করে ঘরে এনে দেন।
কামারচাক ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মামনুর রশিদ বলেন, বিগত ১০ বছর যাবত আশরাফ মিয়াকে খুব ভালো করে জানি। তিনি এ ধরনের কাজ করার লোক নয়। বিগত দিনে উনার বিরুদ্ধে এ রকম কোনো অভিযোগ উঠেনি। পরিকল্পিতভাবে আশরাফকে মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় জড়ানো হয়েছে।