Logo
Logo
×

সারাদেশ

ধামরাইয়ে প্রবাসীর বাড়িতে স্ত্রীর আমরণ অনশন

Icon

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ পিএম

ধামরাইয়ে প্রবাসীর বাড়িতে স্ত্রীর আমরণ অনশন

ঢাকার ধামরাইয়ে প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর অধিকার দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূ। এ প্রচণ্ড শীতের মাঝে এক কাপড়েই ওই গৃহবধূ রোববার সকালে অনশনে বসেছেন। স্বামীর দাবি কয়েক মাস আগেই তার স্ত্রীকে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালত থেকে তালাক প্রদান করেছেন। ওর দিকে স্ত্রী তালাকের কোন নোটিশ পানি বলে দাবি করেছেন। 

ঘটনাটি ঘটেছে ধামরাই উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের দক্ষিণ গাওয়াইল গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মোহাম্মদ নাসিম উদ্দিনের বাড়িতে। 

এ ঘটনায় দিনবর সমঝোতা বৈঠক চললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দু'পক্ষের অভিভাবক ও গ্রাম্য শীত ঋষিগণ এ নিয়ে সারাদিন বৈঠক ও দিল দরবার করেও বিষয়টি  নিরসনে ব্যর্থ হল। প্রবাসী নাসিম উদ্দিন তার স্ত্রীকে তালাকদের দাবি করে তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। অপরদিকে প্রবাসীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার তালাকের কোন নোটিস না পাওয়ার দাবি করে স্বামীর বাড়িতে সারাদিন অনাহারেই অনশনে সময় কাটান। তাকে স্ত্রীর অধিকার না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান অনশনরত ওই প্রবাসের স্ত্রী জেসমিন আক্তার। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে ঢাকা জেলার ধামরাই থানার অন্তর্গত সোমভাগ ইউনিয়নের  দক্ষিণ গাওয়াইল গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মোহাম্মদ নাসিম উদ্দিন মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার অন্তর্গত বলোড়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের তরুণী জেসমিন আক্তারকে গ্রামীন রেজিস্ট্রি মূলে ইসলামের শরিয়া অনুযায়ী বিয়ে করেন। বিয়ের ছয় দিনের মাথায় ওই প্রবাসী ফের প্রবাসে চলে যান। 

পরকীয়ায় জড়ানোর অভিযোগ এনে কয়েক মাস আগে স্ত্রীকে তালাক দেন ওই প্রবাসী নাসিম উদ্দিন। এর আগে কৌশলে গ্রামের মো. আব্দুল আলিম মাতাব্বর ও সাবেকি অফিস সদস্য আব্দুল করিমের মাধ্যমে অসুস্থ স্ত্রীকে চিকিৎসার কথা বলে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় ঐ প্রবাসী আসিম উদ্দিন। দীর্ঘ আট মাস তার স্ত্রীকে শ্বশুরালয় ফেলে রাখলেও তার কোনো খোঁজ খবর নাইনি এবং আনতে যায়নি ওই প্রবাসী। অবশেষে সম্প্রতি ঐ প্রবাসীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার তার স্বজনদের সঙ্গে করে স্বামীর বাড়িতে আসলেও তাকে ওই বাড়িতে উঠতে দেওয়া হয়নি বলে ভুক্তভোগী স্ত্রীর অভিযোগ। 

পরবর্তীতে নিরুপায় হয়ে ওই প্রবাসীদের স্ত্রী জেসমিন আক্তার রোববার সকাল ১০টার দিকে হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামীম আহমেদ, বলরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আইয়ুব আলী ওসাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তারেক হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সঙ্গে করে স্বামীর বাড়িতে আসেন। আমি তখন আদালতের তালাকের কাগজ দেখিয়ে স্ত্রীকে তালাক প্রদানের কথা বলেন। 

এ ঘটনার জেরে ওই প্রবাসীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার স্ত্রীর অধিকার আদায়ের জন্য আমরণ অনশনে বসেন। 

এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বলেন, মেয়েটি খুবই অসহায় তাই আমরা তাকে তার স্বামীর ঘরে তুলে দেওয়ার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু ওই মেয়েটির স্বামী তাকে গ্রহণ করবে না বলে সাপ জানিয়েছেন। 

এ ব্যাপারে প্রবাসী মোহাম্মদ নাসিম উদ্দিন বলেন, আমার স্ত্রী দুশ্চরিত্রা। সে প্রতিদিনই বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে রঙ্গলিলা শেষে গভীর রাতে বাড়িতে ফিরেছে। কাজে আমি তাকে তালাক দিয়েছি। তাকে নিয়ে ঘর সংসার করার ইচ্ছা নেই। কাজেই আজীবন অনশন করেও কোনো লাভ হবে না। কোথায় আছে ভাঙ্গা মাটির ভাঙ্গা কলসি কখনোই জোড়া লাগে না। 

ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে ধামরাই থানায় কেউ কোনো প্রকার অভিযোগ করেনি। কেহ অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম