একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রয়োজন: জোনায়েদ সাকি
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৮ এএম
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মতো বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, ’৭৫ সালের বাকশাল ছিল ’৭২-এর সংবিধানের ক্ষমতার কাঠামোর ধারাবাহিকতা। শেখ হাসিনাও ওই একই সংবিধানে বাকশালের নতুন ভার্সন তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল চলবে। সেটাই তিনি কায়েম করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রয়োজন, এই ফ্যাসিস্ট সংবিধান নয়। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র পেতে হলে আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। তার ভিত্তি হবে গণতান্ত্রিক সংবিধান।
শনিবার রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদ চত্বরে গণসংলাপে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য’ এই গণসংলাপের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলনের রাজশাহী জেলা শাখা। এতে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন জোনায়েদ সাকি।
সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সাকি বলেন, আগামী সংবিধান হতে হবে এই দেশের সব নাগরিককে সমান মর্যাদা দিয়ে। সেই নাগরিকের ধর্মীয় পরিচয় যা-ই হোক না কেন। নাগরিকের মর্যাদা দিয়েই তার মর্যাদা ঠিক হবে। সংসদের ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হবে। রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হবে। তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, নতুন সংবিধানে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। বিচার বিভাগকে আলাদা করতে হবে নির্বাহী বিভাগ থেকে। সরকার যেন বিচার বিভাগের ওপর কোনোরকম খবরদারি করতে না পারে। গণমাধ্যম স্বাধীন করতে হবে এমনভাবে, যাতে করে আদালতের মতোই জনগণের আশ্রয় হয়ে উঠতে পারে গণমাধ্যম।
সাকি আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করতে হবে। আইনের সংস্কার করতে হবে। আর তার ভিত্তিতে এমন নির্বাচন ব্যবস্থা আয়োজন করতে হবে, যাতে বাংলাদেশে আর কেউ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে। নতুন নির্বাচন কমিশন হয়েছে। আপনারা (ইসি) এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন, যাতে আর কেউ নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে।
নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একটা আকাক্সক্ষা নিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিদায় করেছে। তারা নতুন রাজনৈতিক শক্তি দেখতে চায়। এই অভ্যুত্থান দাবি করে, বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে উঠুক। কাজেই আগামী নির্বাচনের আগেই আমাদেরকে জনগণের রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।
গণসংলাপে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহী জেলা শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ। বিশেষ বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু। জেলার সদস্য সচিব জুয়েল রানা এই গণসংলাপ সঞ্চালনা করেন।