তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাচার রোধে হট্টগোল মারপিট
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২১ পিএম
রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নে বিসিআইসির সার ডিলার বিকাশের বিরুদ্ধে সার পাচার ও বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে হট্টগোল ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় উত্তেজিত কৃষকরা বিকাশের ম্যানেজার বিধানকে গণধোলাই দিয়েছেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এ সময় উত্তেজিত কৃষকদের জনরোষ থেকে বাঁচতে ডিলার বিকাশ বিকালে সার বিতরণ করবেন বলে সটকে পড়েন।
শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দফায় দফায় এমন ঘটনা ঘটে। এছাড়াও কৃষি অফিসের বিএস সুমনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। কারণ তিনি বসে থেকে সার বিতরণের ঘোষণা দিয়েছিলেন গত বৃহস্পতিবার; কিন্তু তার কোনো পাত্তাই নেই। ফলে কৃষি অফিস ও ডিলারের সিন্ডিকেটের কাছে চরম জিম্মি হয়ে পড়েছেন আলু চাষিরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, তানোর উপজেলার কামারগাঁ বাজারে মৌসুমি ট্রেডার্স নামের বিসিআইসির সার বিকাশ কুমার দাশ। তিনি বিগত হাসিনা সরকারের সময় থেকে দাপটের সাথে সার পাচার করে থাকেন। ওই সময় সার পাচারে স্থানীয় প্রভাবশালীরা সহায়তা করে থাকত।
উত্তেজিত কৃষকদের শান্ত করতে অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সুবাস ও (বিএস) উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমনের কথামতো মেমো কাটেন। শুক্রবার সকাল থেকে রাতের মেমোতে সার দেয়া শুরু করেন ডিলার বিকাশ। এরই একপর্যায়ে প্রায় ১২/১৪ বস্তা টিএসপি ও পটাশ (এমওপি) সার মোহনপুর উপজেলার কৃষককে বাড়তি দামে দিয়ে দেন। তারা সার নিয়ে যাওয়ার সময় কামারগাঁ ব্রিজের কাছে উত্তেজিত কৃষকরা আটকে দেন।
এদিকে সার আটকানোর খবরে ডিলার বিকাশের দোকানের কর্মচারী বিধান বের হলে তাকে গণধোলাই দিয়ে দোকানের গেটে লাথি মারা শুরু করেন কৃষকরা। তবে স্থানীয় বেশকিছু ব্যবসায়ীদের হস্তক্ষেপে কিছুটা শান্ত হন উত্তেজিত জনতা।
এ ব্যাপারে ডিলার বিকাশ কুমার দাশ বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মেমো না কাটার জন্য এডিশনাল কৃষি অফিসার সুবাসকে অনুরোধ করেছিলাম; কিন্তু তিনি আমার কথায় কর্ণপাত করেননি। রাতে মেমো না কাটলে মারপিট হট্টগোল হতো না। আবার বরাদ্দও কম দিয়েছে। সকাল থেকে বিতরণ করার কারণে টিএসপি ও এমওপি সার শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু ডিএপি ও ইউরিয়া সার রয়েছে। তাও সামান্য পরিমাণে। এটা বিতরণ করতে লাগলে পুনরায় মারপিট শুরু হবে। কারণ চাহিদার তুলনায় একেবারে কম। উপজেলায় সাতজন বিসিআইসির সার ডিলার রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহর মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খায়রুল ইসলাম বলেন, তিনি কৃষি অফিসারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে বলে জানান ইউএনও।