চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় রাস্তা ঘেঁষে দেয়াল তুলে দিয়েছেন এক ব্যক্তি। মাঝখানে তুলে দিয়েছেন অন্যজন। এতে সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করা লোকজন দুর্ভোগে পড়েছেন। 

ঘটনাটি উপজেলার রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড সৈয়দবাড়ি এলাকায়। ভুক্তভোগীরা দেয়াল দুটি উচ্ছেদে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার প্রশাসকের কাছে আবেদন করলে উল্টো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন অভিযুক্তরা।  

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড সৈয়দবাড়ি শহিদ ছালেহ আহমদ সড়ক থেকে পশ্চিমমুখী ইটের রাস্তা দিয়ে মৌলভী ছাবের আহমদ বাড়ি যেতে যাতায়তে আরেকটি রাস্তা রয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে এলাকার লোকজন চলাচল করছিলেন। 

রাস্তার দক্ষিণ পাশের জায়গার মালিক স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ ওরফে কামাল ও তার ভাইদের পরিবার। উত্তর অংশের মালিক সফিউল আলম ও তার ভাইয়ের পরিবার। প্রায় ১০-১২ বছর আগে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় জোর জবরদস্তি করে রাস্তার উত্তর অংশে পাকা দেয়াল তুলে দেন সফিউল আলম। 

কিছুদিন পর রাস্তার দক্ষিণ অংশে চলাচলের রাস্তা সরু করে পাকা দেয়াল দিয়ে দেন কামাল গং ও তাদের পরিবার। দুটি দেয়াল স্থাপন করায় চলাচলে দুর্ভোগে পড়ে যান। বছরের পর বছর এলাকার লোকজন রাস্তাটি দখলমুক্ত করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। 

ভুক্তভোগী লোকজন এ সমস্যার প্রতিকার চেয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর রাঙ্গুনিয়া পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারজান হোসাইনের কাছে আবেদন করেন। আবেদনের পর গত ২৪ অক্টোবর রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার সার্ভেয়ার তীর্থবাসি নাথকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পাঠান। পরে ৫ নভেম্বর ওই এলাকায় যান রাঙ্গুনিয়া পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারজান হোসাইন। তিনি সরেজমিন দেখে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য সিদ্ধান্ত নেন। 

এর মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দেয়াল উচ্ছেদ ঠেকাতে নানা ফন্দিফিকির শুরু করেন। স্থানীয় ভুক্তভোগী লোকজনকে ঘাঁয়েল করতে ৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী ও বয়ষ্ক ব্যক্তিসহ ৬ জনকে বিবাদী করে অভিযুক্তরা মামলা করেন। মামলায় ঘটনার তারিখ ১ নভেম্বর দেখালেও ওই দিন ওই এলাকায় কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। মামলার বিবাদী কয়েকজন এলাকায়ও ছিলেন না বলে জানিয়েছেন বিবাদীরা।  

ভুক্তভোগী মো. নাসের ও জেসমিন আকতার বলেন, রাস্তাটি বড় করতে পৌর প্রশাসকের কাছে আবেদন দেওয়ার কারণে উল্টো ভুক্তভোগীদের মামলা দিয়ে থামাতে চায়। উচ্ছেদ ঠেকাতে নানা কূটকৌশল চালাচ্ছে তারা। বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবেলা করব আমরা। 

জানতে চাইলে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারজান হোসাইন বলেন, ভুক্তভোগীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিন গিয়েছি। উভয়পক্ষকে নিয়ে শুনানিতে বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।