আ.লীগ নেতাদের স্ত্রীর দখলে মহিলা মার্কেট
মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ এএম
মদনের তিয়শ্রী বাজারে মহিলা মার্কেটে (ওমেন্স কর্নার) আওয়ামী লীগ নেতাদের স্ত্রীদের দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মার্কেটে মহিলার পরিবর্তে পুরুষরাই জমজমাট ব্যবসা করছেন। তবে অধিকাংশ দোকানেই জামানত নিয়ে ভাড়াটে চলছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের তহবিলে কোনো টাকা জমা হচ্ছে না। জানে না প্রশাসনের কোনো দপ্তর এ মার্কেট কার? নিয়ম রয়েছে প্রতিটি (ওমেন্স কর্নার) একশ টাকা করে সরকারি কোষাগার রশিদের মাধ্যমে ভাড়ার টাকা জমা দেওয়ার কথা। এসবের কোনো তোয়াক্কাই করছে না প্রভাবশালী দখলদার ব্যক্তিরা। লাগামহীনভাবে চলার কারণে সরকার প্রায় দুই যুগ ধরে হারাচ্ছে রাজস্ব। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মহিলা মার্কেটের দোকানঘর দীর্ঘদিন ব্যবহার করে আসছেন কতিপয় সুবিধাবাদী প্রভাবশালী পুরুষ লোকেরা। মদন উপজেলার তিয়শ্রী বাজারে মহিলাদের জন্য মহিলা মার্কেট ২০০০ সালের দিকে নির্মাণ করা হয়। এ মার্কেটের সুবিধাভোগী হবেন হতদরিদ্র খেটে খাওয়া মহিলারা। মহিলা মার্কেটের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর। কিন্তু বাস্তবে কেউই জানেন না এসব দোকানঘর কার নামে বরাদ্দ রয়েছে।
বুধবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, তিয়শ্রী বাজারে মহিলা মার্কেটে কোনো মহিলা সদস্যের দোকান নেই। মার্কেটের প্রথম দোকানটি রায়হান টেলিকমের। এ দোকানটি বরাদ্দ নেন তিয়শ্রী নূর হোসেন খান একাডেমিকের সাবেক অফিস সহকারী জিয়াউল হকের স্ত্রীর নামে। জিয়াউল হকের কাছ থেকে ৪ বছরের জন্য ভাড়া নিয়েছে রায়হান টেলিকম। তিনি প্রতি মাসে ৬০০ টাকা করে ভাড়া দিচ্ছেন। অন্যদিকে বাস্তা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক নূরুল আলম খানের স্ত্রী বাজিতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা পান্না আক্তারের নামে রয়েছে মহিলা মার্কেটের ঘর বরাদ্দ। বাস্তা দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র মৌলবির দখলেও রয়েছে একটি ঘর। আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন মিয়ার দখলে রয়েছে দুটি ঘর। সাবেক ইউপি সদস্য খোকন মিয়ার স্ত্রীর নামেও রয়েছে একটি ঘর। এভাবেই ১২টি ঘরের মালিক সেজে প্রভাবশালীরা ঘরের ভাড়া উত্তোলন করে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা না দিয়ে নিজেরাই আত্মসাৎ করছেন।
ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, মহিলা মার্কেটের ব্যাপারে সাবেক ইউএনও স্যার প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। আমি দুবার প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এখন কোন অবস্থায় আছে তা আমার জানা নেই। আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন ও সাবেক অফিস সহকারী জিয়াউল হকের মোবাইলে ফোন করলে তাদের নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।