জুসের সঙ্গে বিষপানে ২ শিশুছাত্রকে হত্যাচেষ্টা, শিক্ষক গ্রেফতার
তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ পিএম
রংপুরের তারাগঞ্জে মাদ্রাসার দুই শিশু শিক্ষার্থীকে জুসের সঙ্গে বিষ খাইয়ে ছুরি দিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলার ২০ দিন পর অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গোপনে পালিয়ে থাকা মাদ্রাসার শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে তারাগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থীকে জুসের সঙ্গে বিষপান করার অভিযোগে গত ২ নভেম্বর শিশুর অভিভাবক গোলাম মোস্তাফা তার সন্তানকে বিষ প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে শিক্ষক দোলোয়ার হোসেনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলার দায়ের করেন।
গত ৩১ অক্টোবর বিকালে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের পঞ্চায়েতপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
থানায় মামলা ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার মদিনাতুল করমি লিল্লাহ বোর্ডিং মাদ্রাসার শিক্ষার্থী পঞ্চায়েতপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তাফার ছেলে ইমরান হোসেন (১০) ও একই ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের খাজা মিয়ার ছেলে ইয়ামিন হোসেন (১১)। গত ৩১ অক্টোবর দুপুরে অভিযুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ইয়ামিন হোসেন ও ইমরান হোসেনকে জিন দেখাবেন বলে মাদ্রাসার পাশে একটি কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে একটি গর্তে নামানো হয় ওই দুই শিক্ষার্থীকে। পরে তাদের চোখ কালো কাপড় দিয়ে বাঁধা হয় এবং চোখ খোলার চেষ্টা করলে জিন তাদের বাবা-মার ক্ষতি করবে জানিয়ে জুস পান করতে বলেন ওই শিক্ষক।
এ সময় ইমরান বমি করে। এতে ওই শিক্ষক দুই শিশুকে গালাগাল করতে থাকেন। তাদের কথাবার্তা শুনতে পেয়ে এক প্রতিবেশী এগিয়ে এলে ওই শিক্ষক পালিয়ে যায়। পরে ইমরানের পরিবারের সদস্যরা দুই শিশুকে উদ্ধার করে এবং তাদের কীটনাশকের গন্ধ পাওয়ায় তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখানকার চিকিৎসক শিশু দুটির অবস্থার অবনতি দেখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। প্রায় ৫ দিন চিকিৎসা নিয়ে শিশু দুটি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফেরে।
এ ঘটনায় গত ২ নভেম্বর শিশু ইমরান হোসেনের বাবা গোলাম মোস্তাফা ছেলেকে বিষপান করিয়ে হত্যাচেষ্টা অভিযোগ এনে শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলার পর শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন এলাকা থেকে পালিয়ে ছিলেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় অভিযুক্ত শিক্ষককে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নীলফামারী উপজেলার সদর থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে এসেছেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর দৈনিক যুগান্তরের অনলাইনে ‘দুই ছাত্রকে কবরস্থানে নিয়ে এ কী করলেন মাদ্রাসা শিক্ষক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।