জাকির খান এলেই কেঁপে উঠে আদালতপাড়া, ভয় পেতেন শামীম ওসমানও
আলামিন প্রধান, ফতুল্লা (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খান এলেই কেঁপে উঠে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়া। তাকে এক সময় গডফাদার খ্যাত নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শামীম ওসমানও ভয় পেতেন।
প্রকাশ্যে সভা সমাবেশেই শামীম ওসমান বলতেন দেশের মধ্যে কাউকে ভয় পাই না। গালি দিয়ে বলতেন আমি একমাত্র জাকির খানকেই ভয় পাই।
বৃহস্পতিবার ছিল নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলার ধার্য দিন। এদিন জাকির খানকে কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়। জাকির খানের আসার খবরে সকাল থেকেই কয়েক হাজার ক্যাডার বাহিনী আদালতপাড়ায় উপস্থিত হয়।
এতে ব্যাপক ধাক্কাধাক্কিতে সাংবাদিকসহ অন্তত ৮-১০ জন আহত হয়। এ সময় জাকির খান বাহিনীর অনেকেই যার তার সঙ্গে চরম বেয়াদবি করেছে।
জাকির খানের আইনজীবী রাজীব মণ্ডল বলেন, বৃহস্পতিবার সাব্বির হত্যা মামলার সাক্ষী শেষে আসামিদের পরীক্ষা করেছেন আদালত। এ সময় আমরা বলেছি হত্যাকাণ্ডের সময় জাকির খান দেশে ছিলেন না। এর প্রমাণ হিসেবে জাকির খানের পাসপোর্ট আদালতে দাখিল করেছি। আগামী ২৬ নভেম্বর যুক্তিতর্কের জন্য আদালত দিন ধার্য করেছেন। আশা করি আদালত ন্যায়বিচার করবেন এবং জাকির খানকে খালাস প্রদান করবেন।
তিনি আরও বলেন, সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় ৮ জন আসামি। এর মধ্যে জাকির খান, নাজির (আজমীর ওসমান বাহিনীর সদস্য) ও মোক্তার হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আর অন্যদের মধ্যে জিতু, মামুন খান, আব্দুল আজিজ বাচ্চু, বন্দুক শাহীন ও জঙ্গল লিটন পলাতক রয়েছে। পলাতকদের মধ্যে বন্দুক শাহীন পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে।
সাব্বির আলম খন্দকারের বড় ভাই আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খান। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করাতেই সাব্বিরকে ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় গুলি করে নির্মমভাবে খুন করা হয়।
তৈমূর আরও বলেন, কেউ কেউ জাকির খানকে জনপ্রিয় বলে! কিন্তু কোনো ভালো কর্ম আছে জাকির কিংবা তার পরিবারের? সন্ত্রাস দমন আইনে জাকিরের সাজা হয়েছিল। সেটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুপারিশে মওকুফ হয়। আরেকটি মামলায় তার সাজা এখনো বহাল রয়েছে। জেল থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে জাকির এখনো তার অনুগামীদের দিয়ে চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছেন বলে দাবি করেন তৈমূর। তিনি শহরের বিভিন্ন রাস্তায় টাঙানো জাকিরের ব্যানার, ছবি অপসারণের দাবি জানান।
সাব্বির আলম খন্দকার ছিলেন গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার অ্যান্ড ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রতিষ্ঠাকালীন পরিচালক ও সাবেক সহ-সভাপতি।