Logo
Logo
×

শেষ পাতা

দুই কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ-ভাঙচুর

নানা অজুহাতে গাজীপুরে প্রায়ই অচল হচ্ছে সড়ক

চরম দুর্ভোগ, গন্তব্যে যেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা * পোশাক কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

Icon

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নানা অজুহাতে গাজীপুরে প্রায়ই অচল হচ্ছে সড়ক

ছবি: সংগৃহীত

বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের জিরানী ও চক্রবর্তী এলাকায় বুধবার সকাল থেকে বিক্ষোভ করেছে দুই পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে। এতে সড়কের উভয় দিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার-হাজার যাত্রী। বিক্ষোভের সময় শ্রমিকরা কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেছে। বেতন-ভাতা বকেয়াসহ নানা অজুহাতে প্রায় প্রতিদিনই গার্মেন্ট শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, ভাঙচুরে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, গাজীপুরে শত শত গার্মেন্ট কারখানা রয়েছে। কিন্তু দু-একটি কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলন-অবরোধের কারণে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুরো শিল্পে। কোনো কারখানায় বিক্ষোভ হলে অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের মাঝেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে করে পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো সকাল ৯টা থেকে গাজীপুর মহানগরীর সারাব এলাকার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা পাশের চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিল্লাল হোসেন নামে বেক্সিমকোর এক অপারেটর বলেন, মঙ্গলবার তাদের আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ বুধবার বেতন পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু সেই কথামতো তাদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে শ্রমিকরা সকাল থেকে বিক্ষোভ করছেন। বেতন-ভাতা না পাওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না বলে জানান।

এদিকে জিরানী এলাকায় হামিম গ্রুপের ‘দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড’ কারখানার শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কাজে যাচ্ছিলেন। চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অতিক্রম করার সময় নবীনগরগামী পলাশ পরিবহণের একটি বাস শ্রমিকদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে অন্তত ছয় শ্রমিক আহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এ সময় দুর্ঘটনায় এক নারী শ্রমিক নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের জিরানী এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি বাসও ভাঙচুর করেন।

এ সময় দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা দুই কর্মকর্তার পদত্যাগ, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ ১২ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। খবর পেয়ে শিল্পপুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে কথা বলে সমাধান করার আশ্বাস দিলে বেলা ১১টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান।

দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিক আবুল হাসান বলেন, ‘পলাশ পরিবহণের বাসের চাপায় আমাদের ছয় শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ কারণে আমরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছি।’ ওই কারখানার ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) আবু সাঈদ বলেন, ‘দুর্ঘটনা হয়েছে কারখানার বাইরে। আমাদের তো কোনো সমস্যা দেখছি না। এছাড়া তাদের ১২ দফা দাবির বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’ কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, সকাল ৯টা থেকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এতে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন আছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম