৩৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন মুলাদীর ৭ শতাধিক গ্রাহক
মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ পিএম
বরিশালের মুলাদীতে কর্মীদের আহত করায় তিন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের জয়ন্তী নদীর উত্তরপাড়ে ভেদুরিয়া, ছত্রিশ ভেদুরিয়া ও ষোলঘর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গোসাইরহাট আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। ফলে এসব এলাকার ৭ শতাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন।
বুধবার বিকাল পর্যন্ত এসব এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন চালু করা হয়নি। ৩৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় পরিবারগুলো ভোগান্তিতে পড়েছেন। তারা দ্রুত সমাধানের জন্য মুলাদী ও গোসাইরহাট পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
গত মঙ্গলবার দুপুরে ভেদুরিয়া এলাকায় এক গ্রাহক লোকজন নিয়ে হামলা করে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাসহ ৬ জনকে আহত করেন। ওই বিষয়ের নিষ্পত্তি না হওয়ায় এবং কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা না পাওয়ায় বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গোসাইরহাট আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আব্দুল মতিন মিয়া।
ছত্রিশ ভেদুরিয়া গ্রামের আব্দুল খালেক ব্যাপারী বলেন, জয়ন্তী নদীর কারণে পল্লী বিদ্যুতের মুলাদী জোনাল অফিস সফিপুরের ভেদুরিয়া, ছত্রিশ ভেদুরিয়া ও ষোলঘরের একাংশে বিদ্যুৎ লাইন দিতে পারেনি। পরে গোসাইরহাট জোনাল অফিসের আওতায় ওই এলাকায় বিদ্যুতের লাইন দেওয়া হয়। লাইনের পাশের গাছের ডালপালা কাটার জন্য গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়। দুপুরে বিদ্যুৎ কর্মকর্তা ও কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনার পর তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আর বিদ্যুৎ লাইন চালু করেননি। ফলে ৩৬ ঘণ্টা ধরে এলাকার মানুষ বিদ্যুৎহীন রয়েছেন।
গোসাইরহাট জোনাল অফিসের ডিজিএম আব্দুল মতিন মিয়া বলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গেই পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজ করতে হয়।
কোনো এলাকায় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পেলে কর্মীরা সেই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করবেন না। ওই এলাকার গ্রাহকেরা উদ্যোগ নিলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান ও বিদ্যুৎ লাইন চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দুপুরে গোসাইরহাট পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মিটার রিডার রুবেল মিয়া রিডিং সংগ্রহ করতে গেলে ভেদুরিয়া গ্রামের জহির মুন্সী তার মিটারের রিডিং ও ব্যবহৃত ইউনিট জানতে চান। বিদ্যুৎ না থাকায় ওই গ্রাহকের মিটারে রিডিং দেখা না যাওয়ায় ইউনিট বলতে পারেননি রুবেল মিয়া। ওই সময় তাকে মারধর করেন জহির মুন্সী।
বিষয়টি রুবেল গোসাইরহাট জোনাল অফিসের ডিজিএমকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে কর্মকর্তা ও লাইনম্যানদের পাঠান। ওই সময়ে জহির মুন্সী, তার স্ত্রী মিম আক্তার, ছেলে সজল ও হেলাল, ইউসুফ সালাম মুন্সি ও হজরত আলী মুন্সি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেন। এতে গোসাইরহাট পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী সাদেক খান, এইসি মাসুদ রানা, লাইনম্যান বিশ্বজিৎ তালুকদার ও রবিন দেওয়ান, ইলেকট্রিশিয়ান ইমরান হোসেন ও মিটার রিডার রুবেল হোসেন আহত হন।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।