নিলাম অযোগ্য ২১ কনটেইনার পণ্য ধ্বংস করা হচ্ছে
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৮ পিএম
চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে থাকা নিলাম অযোগ্য ২১টি কনটেইনার ভর্তি ৫৬৫ টন পণ্য ধ্বংস শুরু করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। সোমবার প্রথম দিনে ৪ কনটেইনার পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে।
হালিশহরের আনন্দ বাজারে অবস্থিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং গ্রাউন্ডে এস্কেভেটর ও বুলডোজার দিয়ে এসব পণ্য মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার সাইদুল ইসলামের উপস্থিতিতে এসব পণ্য ধ্বংস করা হয়।
পর্যায়ক্রমে অন্য পণ্যগুলোও ধ্বংস করা হবে। প্রথম দিনে ধ্বংস করা চার কনটেইনারের মধ্যে ৩ কনটেইনারে আদা এবং এক কনটেইনার কমলা রয়েছে। বাকি পণ্যগুলো পর্যায়ক্রমে ধ্বংস করা হবে।
ধ্বংসযোগ্য পণ্যের মধ্যে মাল্টা, আদা, পেঁয়াজ, ড্রাগন ফলসহ বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। সময়মতো নিলাম না হওয়ার কারণে এসব পণ্যের বিপরীতে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব হারিয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, অনেক সময় আমদানিকারক পণ্য আমদানি করলেও বাজারে ধস নামার কারণে, লোকসানের ভয়ে, কিংবা নানা জটিলতায় পণ্য খালাস করেন না। নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকারককে চিঠি দেন। এর পরও সাড়া পাওয়া না গেলে কাস্টমসের নিলাম কমিটি খালাস না নেওয়া পণ্য নিলামের ব্যবস্থা করে।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে আমদানিকারকের অনীহা, নিলামে ধীরগতি, বন্দর ও কাস্টমসের চিঠি চালাচালিতে দীর্ঘসূত্রতাসহ নানা কারণে বন্দরে পড়ে থাকা আমদানি পণ্যগুলো নিলাম অযোগ্য হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে সে ধরনের পণ্য ধ্বংস করা হয়।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ ২১ কনটেইনার পণ্য নিলাম অযোগ্য হয়ে পড়ায় ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয়। এসব কনটেইনারের মধ্যে রয়েছে ৮১ টন আদা, ২৫ টন পেঁয়াজ, ১৬২ টন মাল্টা, ২৭৮ টন মেন্ডারিন ও ১৯ টন ড্রাগন। এর বাইরে রয়েছে ১ কনটেইনার কমলা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, আমদানিকারকরা পণ্য খালাস না নেওয়ার করণে সেসব পণ্যভর্তি কনটেইনার বন্দরের জায়গা দখল করে পড়ে থাকে। বন্দর কর্তৃপক্ষও বার বার তাগাদা দেয় জায়গা খালি করে দেওয়ার জন্য। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পণ্যের আমদানিকারকদের চিঠি দিলেও তারা সাড়া দেয় না। এই লেখালেখির মধ্যেই দীর্ঘ সময় চলে যায়। যাতে অনেক ক্ষেত্রে পচনশীল বা ভোগ্যপণ্য নিলাম অযোগ্য হয়ে পড়ে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অনেক সময় কাস্টম কর্তৃপক্ষ আইন জটিলতা, কোয়ারেনটাইন রিপোর্টের অজুহাতসহ বিভিন্ন মারপ্যাঁচে ফেলে আমদানিকারকদের বিপাকে ফেলেন। খালাসে দীর্ঘসূত্রতা হলে বন্দর ও শিপিং লাইনের জরিমানার অংক বড় হয়ে যায়। এই দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়ে বাজারে পণ্যের দরে পতন ঘটে। সবমিলিয়ে আমদানিকারক যখন দেখেন, তার পণ্যটি খালাস করতে গেলে লাভের পরিবর্তে লোকসানই বেশি হবে; তখন আর পণ্য খালাস করেন না।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার সাইদুল ইসলাম জানান, তারা যত দ্রুত সম্ভব খালাস না নেওয়া পণ্য নিলামের ব্যবস্থা করেন। নিলামের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আহরণের চেষ্টা করেন। কিন্তু অনেক সময় নানা জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে পণ্যগুলো নিলাম অযোগ্য হয়ে পড়ে। আর তখনই এ ধরনের পণ্য ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ধ্বংসযোগ্য ২১ কনটেইনার পণ্যের মধ্যে সোমবার ৪ কনটেইনার ধ্বংস করা হয়েছে এবং বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে ধ্বংস করা হবে বলে জানান তিনি।