বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন
শহিদ ছানির ছবি বুকে নিয়ে বিলাপ করছে পরিবার
হারিছ আলী, গোলাপগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৭ পিএম
৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দিনভর টালমাটাল পরিস্থিতি ছিল সিলেটের গোলাপগঞ্জ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শত শত ছাত্র-জনতার মিছিলে উত্তাল ছিল গোটা উপজেলা।
হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে মিছিলে যোগ দিয়েছিল শীলঘাট গ্রামের টগবগে
তরুণ ছানি আহমদ। তখন ছাত্র-জনতার মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে ছানিসহ
অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। আহতদের সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যুর
কোলে ঢলে পড়েন ছানি আহমদ। তার এমন মৃত্যুর খবর উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্রই নেমে আসে
শোকের ছায়া।
বর্তমানে শহিদ ছানি আহমেদের পরিবারের লোকজন কেবল তার ছবি বুকে নিয়ে বিলাপ
করছেন। শহিদ ছানি আহমেদের পরিবার বলছেন, ছানি এভাবে দুনিয়া ছেড়ে যাবে তা কখনো ভাবিনি।
জানা যায়, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবর্ষণের ঘটনায়
থানায় হত্যা মামলা করা হলেও উল্লেখযোগ্য কোনো আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এ নিয়ে হতাশ শহিদ ছানি আহমদের পরিবার।
সরেজমিন ছানি আহমদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পুরো বাড়িতে বিরাজ করছে সুনসান
নীরবতা। ঘরে ঢোকা মাত্র ছানির মা রাবিরা বেগম সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কেঁদে ফেলেন।
তিনি বলেন, আমার ছেলের কোনো দোষ ছিল না। সে ছাত্র-জনতার মিছিলে গিয়ে
গুলিতে শহিদ হয়েছে। ছেলের শোক আমরা আর সইতে পারছি না। আমরা ছেলের হত্যাকারীদের শাস্তি
চাই। ২ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে ছানি ছিলেন সবার বড়। বৃদ্ধ পিতা কয়ছর আহমদকে সহায়তা করতে
কাজকর্ম করতেন। মোটামুটি পরিবারটি ভালো চলছিল। কিন্তু হঠাৎ ছানি আহমেদের মৃত্যুতে গোটা
পরিবারের হয়ে গেছে ছন্দপতন। পরিবারে বড় হওয়ায় ৮ জনের সংসারের ঘানি টানতেন তিনি। গোটা
পরিবার এখন অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে। ছেলেকে হারিয়ে মা রাবেয়া বেগম এখন শুধু কাঁদছেন।
কাউকে দেখলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
ছানির বাবা কয়ছর আহমদ জানান, ছেলের কোনো অপরাধ ছিল না। শুধু বৈষম্যবিরোধী
মিছিলে যাওয়ার কারণে আমার ছেলেকে গুলি করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন চন্দ্র পাল নলেন, শহিদ ছানি আহমদের
পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।