সোনাতলায় স্বাস্থ্য সহকারীর দাপট
কর্মস্থলে ৩ বছর না এসেও বেতন উত্তোলন, পদোন্নতি
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২১ পিএম
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে সদর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী রাবেয়া সুলতানা গত তিন বছর কর্মস্থলে না এসেও নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার পক্ষে আবদুর রশিদ নামে এক স্বাস্থ্য সহকারী কাজ করে থাকেন। কাজ না করেও তিনি সম্প্রতি সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এহেন ঘটনায় নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে বর্তমান সোনাতলা সদর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিদর্শক রাবেয়া সুলতানা বলেন, অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও গুজব। তিনি নিয়মিত অফিস ও দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কেউ শত্র“তা করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন কবিরাজ জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছেন। সতর্ক করায় এখন নিয়মিত অফিস করছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, বগুড়ার সোনাতলা পৌরসভার আগুনিয়াতাইড় গ্রামের রাবেয়া সুলতানা ২০০৪ সালের ১ আগস্ট স্বাস্থ্য সহকারী (টিকাদান) পদে চাকরি পান। এরপর থেকে তিনি নিয়মিত তার দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে গত তিন বছর ধরে তিনি কর্মস্থলে ঠিকমতো আসেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে টাকার বিনিময়ে তাদের মুখ বন্ধ রাখেন।
সপ্তাহে দু’দিন টিকাদানের পাশাপাশি চারদিন চরমগাছা কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও তিনি আসেন না। তার পক্ষে ওই ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী আবদুর রশিদ কাজ করে থাকেন। অজ্ঞাত খুঁটির জোরে রাবেয়া সুলতানা অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন না করলেও রাবেয়া সুলতানা ১১ সেপ্টেম্বর সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন।
১৪ অক্টোবর থেকে সোনাতলা উপজেলায় জড়ায়ু ক্যানসার টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হলেও তাকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি। মোটা অঙ্কের মাসোহারার বিনিময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অসাধু কর্মকর্তারা তাকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে রাবেয়া সুলতানার পক্ষে প্রক্সি দেওয়া স্বাস্থ্য সহকারী আবদুর রশিদ বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। চমরগাছা কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মাহমুদ হাসান টুটুল বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী থেকে পদোন্নতি পেয়ে বর্তমান ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক রাবেয়া সুলতানা ঠিকমতো অফিস ও কাজ করেন না। এরপরও তিনি নিয়মিত বেতন-ভাতা গ্রহণ করছেন। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক।
সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক আবদুল হাসিব জানান, ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক রাবেয়া সুলতানা ছুটি না নিয়ে অনুপস্থিত থাকেন। তিনি আরও বলেন, যে কাজে ফাঁকি দেবে সে শাস্তি পাবে।