কাশিয়ানী নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ
কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্ব্যবহার, কটূক্তি ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সাকিব সরদার নামে এক ভুক্তভোগী অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ফুকরা গ্রামের বাসিন্দা সাকিব সৌদি আরব যাওয়ার পাসপোর্ট করার জন্য গত এক মাস আগে অনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদন করেন।
সেই আবেদন ফরম, ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন সনদ, অঙ্গীকারনামা, বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট, ট্যাক্স পরিশোধের ডকুমেন্ট, বিদ্যুৎ বিলের কপি ও চেয়ারম্যানের নাগরিকত্বের সনদসহ নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসুর কাছে জমা দেন।
এ সময় নির্বাচন কর্মকর্তা যাচাইয়ের জন্য সাকিবের কাছে তার নাম ও বয়স জেনে আবেদন ফাইলে ‘লাল দাগ’ দিয়ে বাতিল করে দেন। পরবর্তীতে গত ১৩ নভেম্বর সাকিব পুনরায় আবেদন ফরমসহ একই কাগজপত্র নতুন করে নিয়ে ওই কর্মকর্তার কাছে যান।
তিনি সাকিবকে দেখেই বলেন, তোমার বয়স হয়নি। তুমি কম্পিউটারে জাল কাগজপত্র তৈরি করে নিয়ে এসেছো। আমি শুধু কাগজপত্র দেখে যাচাই করি না। ফেস দেখেও বয়স যাচাই করি।
এক পর্যায় তিনি সাকিবকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে অসদাচরণ করেন ও ধমক দিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
শুধু সাকিব সরদারই নয়, কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাচন অফিসে সেবা নিতে গিয়ে এমন হয়রানির শিকার হয়েছেন অনেক সেবা প্রত্যাশী। প্রতিদিনই নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসুর সঙ্গে সেবাপ্রত্যাশীদের ঘটছে বাকবিতণ্ডা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন, ভোটার স্থানান্তর, নতুন ভোটার হওয়াসহ অন্যান্য সেবাপ্রত্যাশীদের অহেতুক হয়রানি করেন নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসু।
নিজেকে সৎ ও নীতিবান কর্মকর্তা দাবি করে ‘বৈধ’ কাগজপত্রকে অবৈধ বলে বাতিল করে দেন। তিনি নিজের ইচ্ছামতো নতুন ভোটারের আবেদনপত্র সপ্তাহে একদিন জমা নেন। এতে সেবা নিতে আসা লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
বছরের পর বছর অভিযোগ পড়ে থাকলেও, সেবাপ্রত্যাশীরা অফিসে গিয়ে খোঁজ না নিলে তিনি ওই বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তে যান না। এভাবে অফিসে দীর্ঘদিন ধরে অসংখ্য তদন্ত পড়ে আছে।
নির্বাচন কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতায় সময়মতো আবেদন করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হতে না পেরে বিদেশ যেতে পারছেন না অনেক তরুণ। নির্বাচন কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ সেবাপ্রত্যাশীরা।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিগত সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশে প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া ও এসব কর্মকর্তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার কার্যালয় গেলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় দিতেই রেগে যান। তিনি বলেন, আমার এখানে এসে সাংবাদিক পরিচয় দেবেন না। আমি অনিয়ম-দুর্নীতি করি না। আমি সাংবাদিকদের ভয় পাই না। আপনাদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি না। আমার কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করব।