অবশেষে জামিন পেলেন কোটালীপাড়ার সেই দিনমজুর
কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৩ পিএম
স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে থাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দিনমজুর জামাল মিয়া অবশেষে জামিন পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফিরোজ মামুন দিনমজুর জামাল মিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন।
চার শিশু সন্তানের জনক জামাল মিয়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের চিত্রাপাড়া গ্রামের হারিজ মিয়ার ছেলে।
এর আগে গত ৮ নভেম্বর দিবাগত রাতে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ জামাল মিয়াকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ পরদিন শনিবার (৯ নভেম্বর) জামাল মিয়াকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
সরেজমিন জানা গেছে, গত এক মাস আগে জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথী বেগম একসঙ্গে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এর ছয় দিন পর সাথী বেগম মারা যান। স্ত্রীর মৃত্যুর পর সদ্য জন্ম নেওয়া দুগ্ধপোষ্য দুই কন্যাসন্তানসহ চার ছেলে মেয়েকে নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। ঘরে অসুস্থ মা ও চার শিশু সন্তানের লালনপালন করে দিন কাটে দিনমজুর জামাল মিয়ার। এ অবস্থায় পুলিশ জামাল মিয়াকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করে।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর দেশব্যাপী আলোচনার ঝড় ওঠে। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার জামালের আইনজীবী চামেলী আক্তার জামিনের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আজ বৃহস্পতিবার আদালত জামাল মিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনুর আক্তার, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হারুনুর রশিদ, সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রাকিবুল ইসলাম শুভ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার রাশেদুর রহমান চিত্রাপাড়া গ্রামে জামাল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে নগদ টাকা, শিশুখাদ্য, গরম কাপড়, শিক্ষা উপকরণ, খেলনা সামগ্রী জামাল মিয়ার মা গোলেজান বেগমের হাতে তুলে দেন।
এছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান পরিবারটিকে নগদ অর্থ এবং খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহায়তা করে।
অপরদিকে জামাল মিয়ার জামিনের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তার পরিবারসহ পাড়া-প্রতিবেশী আনন্দে ফেটে পড়ে।
জামাল মিয়ার মা গোলেজান বেগম তার ছেলের জামিনের খবর শুনে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অধিদপ্তর, গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।