ডাকাতিকে চুরির ঘটনায় রূপ দিতে তিনবার এজাহার পরিবর্তন ওসির
পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ পিএম
চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটি ফার্ম থেকে ডাকাত দল কর্তৃক ১৯টি গরু লুটের ঘটনাকে চুরির ঘটনায় রূপ দিতে তিন বার এজাহার পরিবর্তন করেছেন ওসি জায়েদ নূর।
মামলার বাদী হেলাল উদ্দিন চৌধুরীর অভিযোগ, তিনি আইনের আশ্রয় নিতে থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু ডাকাতির ঘটনাকে ওসি সাহেব তিনবার করে পরিবর্তন করে চুরিতে রূপ দিয়েছেন। আমি বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্তই জানতাম সেটা ডাকাতির মামলাই হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দেখলাম সেটা চুরির মামলা হয়েছে।
চুরির মামলায় রূপান্তর করার জন্য যে কেয়ারকেটারকে ওসি সাহেব আসামি করেছেন ডাকাতির সময় সে ডাকাতদের জিম্মায় ছিল, যা ভিডিওতে দেখা গেছে এবং তা ওসিসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া পুলিশ অফিসাররা দেখেছেন ও রেকর্ড নিয়েছেন।
জানা গেছে, প্রহরীকে জিম্মি করে একটি ফার্ম থেকে ডাকাতরা ১৯টি দেশে ও বিদেশি জাতের গরু লুট করে। উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের হুলাইন ছালেহ নুর ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন ফার্ম থেকে ডাকাতদল খামারের প্রহরী আবদুল মান্নান (৪২)কে জিম্মি করে খামার থেকে এসব গরু লুট করা হয়। ফার্মের গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশের পর কেয়ারটেকারকে জিম্মি করে বাইরে নিয়ে যায়।
মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রাত ৪টা ১১ মিনিটে গরু বোঝাই নম্বর প্লেটবিহীন বড় আকারের ট্রাকে করে মউজ্জ্যারটেকস্থ টোল প্লাজা অতিক্রম করতে দেখা যায়।
ফার্মের মালিক হেলাল চৌধুরী জানান, ডাকাতির ঘটনায় অন্তত ২০ জন অংশ নিয়েছিল। তারা খামারে প্রবেশ করার পর বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামরা বন্ধ করে দেয়। এরপরও কয়েকটি ক্যামরায় তাদের ডাকাতির বিষয়টি ধরা পড়ে। তাতে দেখা যায় কয়েকজন মুখ বাধাঁ ও অন্যদের মুখমন্ডল দেখা যাচ্ছিল।
ডাকাতির শুরুতেই তারা কেয়ারটেকারকে জিম্মি করে খামারের বাইরে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সেখান থেকে তারা কয়েক ঘণ্টা আলামত সংগ্রহের পর উপস্থিত কেয়ারটেকারকে নিয়ে চলে যায়। এরপর মামলা করার জন্য থানায় গেলে ওসির নির্দেশে এজাহার কপি তিনবার পরিবর্তন করে পুলিশ। পরে জানতে পারি কেয়ারটেকারকে জড়িয়ে সিধঁ কেটে চুরির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু ফার্মে সিধঁ (সুড়ঙ্গ) কাটা হয় নি। গ্রিল কেটে ফার্মে প্রবেশ করেছিল ডাকাতদল।
এ বিষয়ে জানতে পটিয়া থানার ওসি জায়েদ নূরকে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেন নি। পরে নিজ থেকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে কথা বলতে হলে থানায় যেতে অনুরোধ করেন।